চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে দেশের প্রথম ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে সমুদ্র গবেষণা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৬ মার্চ এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকার কারিগরি ও যান্ত্রিক সহায়তা দিচ্ছে চীনের জাতীয় সমুদ্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেকেন্ড ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি’। এই প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনা প্রতিষ্ঠানটির যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জানা গেছে, গ্রাউন্ড স্টেশনে ২২৪ টেরাবাইটের বিশাল স্টোরেজ সক্ষমতা থাকবে। চীনের প্রায় ১১টি স্যাটেলাইট থেকে এটি সরাসরি ডেটা পাবে।
প্রকল্পের সমন্বয়ক এবং চবি সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন জানান, এই স্টেশনটি ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। এটি চীনের এইচওয়াই–১এসআই/ডি এবং এফওয়াই–৪বি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, বাতাসের গতি এবং মেঘের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগেই সতর্কবার্তা দিতে পারবে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নতুন প্রযুক্তি স্থাপন হলে দেশের সমুদ্র ও বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থাকে নির্ভরযোগ্য তথ্য, পূর্বাভাস এবং সতর্কবার্তা দেওয়া আরও সহজ হবে। এটি ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করবে।
চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার জানান, প্রকল্পের কাজ প্রত্যাশিত গতিতে চলছে। ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৪ ট্রাক মালামাল ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছেছে এবং চীনা প্রকৌশলীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দ্রুত কাজ শুরু করবেন।