হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নিপীড়িত-নির্যাতিত-শোষিত মানুষের অবিসংবাদিত বিশ্বনেতা মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা বিশ্ব ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অধ্যায় নির্মাণে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ১৯৭০ সালের ৭ ও ১৭ ডিসেম্বর যথাক্রমে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ও পাঁচটি প্রদেশে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, নির্বাচনের পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং সামরিক শাসকগোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে নানা কূটকৌশল অবলম্বনে আওয়ামী লীগের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর না করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ষড়যন্ত্র চলাকালে ১৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ মার্চ ৩ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করে। চক্রান্তের অংশ হিসেবে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভুট্টো সংবাদ সম্মেলন করে ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচিত হলে পাকিস্তানের স্থিতিশীল ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা এবং ঢাকায় এলে তার দলের সদস্যদের জিম্মি হয়ে পড়ার অভিযোগে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বয়কটের ঘোষণা দেয়। জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচিতে সাংবাদিকদের বলে, “আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তা হবে ‘ডিকটেটরশিপ অব দ্য মেজরিটি’ অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠের একনায়কতন্ত্র।”
উল্লেখ্য অযৌক্তিক-অগণতান্ত্রিক বক্তব্যের জবাবে ২৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভুট্টোর বক্তব্য গণতন্ত্র পরিপন্থী। গণতন্ত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলই সরকার গঠন করে। ভুট্টো সাহেবের ইচ্ছা পাকিস্তানে সংখ্যালঘু দলের একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক, ডিকটেটরশিপ অব দ্য মাইনরিটি বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ৬ দফা কারও উপরে চাপিয়ে দেব না। একজন সদস্যও যদি যুক্তিযুক্ত কোনো দাবি করেন, তা গ্রহণ করা হবে।’ অবাঙালি নাগরিকদের নিরাপত্তা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘তাঁরা এ মাটিরই সন্তান, এ দেশ তাঁদেরও দেশ, তাঁরা জনগণের সঙ্গেই থাকবেন; জনগণই তাঁদের নিরাপত্তা দেবে।’ ১ মার্চ পূর্বাণী হোটেলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে যোগদানের প্রস্তুতিমূলক আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের বৈঠককালীন সময় রোডিওতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কর্তৃক জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের হটকারী সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়।
পাকিস্তানি স্বৈরতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠীর চক্রান্তমূলক এই ঘোষণা প্রচারের সাথে সাথে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-দল-মত নির্বিশেষে দেশের আপামর জনগণ বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে। ক্ষমতা হস্তান্তরের জঘন্য এই কূটকৌশল এবং সুগভীর ষড়যন্ত্রের সামগ্রিক উপলব্ধিতে ক্ষুব্ধ বঙ্গবন্ধু সঙ্গে সঙ্গে সংসদীয় দলের বৈঠক স্থগিত করে সংবাদ সম্মেলনে জনগণের মুক্তির ডাক দিয়ে বলেন, ‘এটি পাকিস্তানি শাসকদের স্বৈরচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আমরা বাঙালিরা ঘৃণাভরে এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করলাম এবং ২ মার্চ ঢাকায় ও ৩ মার্চ দেশব্যাপী বাংলার সাধারণ মানুষ হরতাল পালন করবে। পরবর্তী দিক নির্দেশনার জন্য আপনারা ৭ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’ ঐদিন বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ৬ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষিত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘ভুট্টোর দল ও কাইয়ুম খানের মুসলিম লীগ ছাড়াও আমরা শাসনতন্ত্র রচনা করতে পারব।’ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আসুন, সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করুন। যদি অসহযোগিতা করেন, আমরাও শান্তিপূর্ণ অসহযোগের কর্মসূচি দেব। ২৩ বছর যাবৎ একই ষড়যন্ত্র করছেন, আর ষড়যন্ত্র করবেন না।’
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে দেশের মুক্তিকামী মানুষের লাগাতার হরতালে কার্যত ঢাকাসহ সারাদেশ অচল হয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানিরাও এর উত্তাপ ভালভাবেই আঁচ করতে পেরেছিল। ৬ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোনে জানান যে, ২৫ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। পরিস্থিতির চাপে ভীতসন্ত্রস্ত পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক সদর দপ্তর থেকে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ নেতাদের এই বার্তা দেওয়া হয় যে, ৭ মার্চ যেন কোনভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা না করা হয়। মেজর সিদ্দিক সালিক রচিত গ্রন্থসূত্রে জানা যায়, ‘পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ৭ মার্চের জনসভার প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ নেতাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের সংহতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হলে তা শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। বাঙালি বিশ্বাসঘাতকদের হত্যার জন্য ট্যাংক, কামান, মেশিনগান সবই প্রস্তুত রাখা হবে। প্রয়োজন হলে ঢাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। শাসন করার জন্য কেউ বা শাসিত হওয়ার জন্যও কিছু থাকবে না।’
বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লক্ষাধিক বাঙালির সম্মুখে পাকিস্তানি হায়েনাদের শত হুমকি সত্ত্বেও অত্যন্ত সুকৌশলে তাঁর ভাষণে বাংলাদেশের মুক্তি-স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ভাষণের শেষ অংশে তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম-এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ ভাষণের পরদিন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) সদর দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চতুর শেখ মুজিব, চতুরতার সাথে বক্তৃতা করে গেলেন। একদিকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেলেন অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হওয়ার দায়িত্বও নিলেন না। নীবর দর্শকের ভূমিকা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিল না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেটি ঐতিহাসিক বক্তৃতা বলা হলে যথেষ্ট হবে না। সেই বক্তৃতা ছিল এই ধরিত্রীর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ। ভাষার শক্তিতে, আবেগের স্ফুরণে এবং বক্তব্যের শাণিত ক্ষুরধারে ৭ মার্চের ভাষণ ছিল অসাধারণ এবং অদ্বিতীয়। পৃথিবীর আর কোন দেশে কোনো রাজনীতিবিদ বা গণনায়ক কখনও এমন বলিষ্ঠ ভঙ্গিতে, তেজোদ্দীপ্ত ভাষায় এবং সময়োপযোগী করে বক্তৃতা রেখেছেন, তার তেমন কোন দৃষ্টান্ত নেই। ২০১৩ সালে জ্যাকব এফ. ফিল্ড সম্পাদিত গ্রন্থ ‘WE SHALL FIGHT ON THE BEACHES – THE SPEECHES THAT INSPIRED HISTORY বিশ্বের শ্রেষ্ঠ একচল্লিশটি ভাষণের এক অনবদ্য সংকলন। উল্লেখিত গ্রন্থে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩১ থেকে ১৯৮৭’র রোনাল্ড রিগেনের ভাষণসহ মোট একচল্লিশটি বিশ্ব শ্রেষ্ঠ ভাষণের অন্যতম ছিল বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ‘The Time is the Struggle for Independence’ ভাষণটি।
বিশ্বখ্যাত রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠাতা ও সফল রাষ্ট্রনায়কদের যেসব ভাষণ বিশ্ববাসীকে করেছে নির্ভীক প্রাণিত ও প্রতিশ্রুত, সব ভাষণই ছিল সম্ভবত লিখিত ভাষণ। ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল একমাত্র ব্যতিক্রম। লিখিত তো নয়ই, কোন ধরনের ফুটনোট বা স্ক্রিপ্ট দেখে বঙ্গবন্ধু এই ভাষণ প্রদান করেন নি। দৃপ্তকন্ঠে নির্মাল্য অসাধারণ কাব্যিক ভঙ্গিমায় দেশ সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অহিংস অসহযোগ অন্দোলন পরিচালনা এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের সার্বিক কৌশলপত্র নির্দেশিত করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতির পিতা স্ব স্ব দেশের জনগণকে জাতিরাষ্ট্র উপহার দেওয়ার যৌক্তিক পটভূমি তৈরিতে অবদানঋদ্ধ হয়েছেন। রাশিয়ান জাতির পিতা প্রথম পিটার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন, মেক্সিকোর মিগুয়্যেল হিডালগো, উরুগুয়ের জোসে গার্ভাসিও অর্টিগাস, চেক প্রজাতন্ত্রের ফ্রান্টিসেক প্যালাকি, আধুনিক চীনের সান ইয়াত সেন, ভারতের মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী, তুরস্কের মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক, সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইয়ো প্রমুখের জীবন ও রাষ্ট্রদর্শন যেমন বিশ্বকে পথ দেখিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যুজ্জ্বল অবস্থান অতিশয় দিগ্বলয় এবং প্রমিত।
বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সাল ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। বস্তুতপক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিত বিশ্লেষণে এটি সুষ্পষ্ট যে, ৭ মার্চ বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম ও স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসে একটি অনন্যসাধারণ গুরুত্বপূর্ণ অবিনস্বর দিন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণের নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। এই ভাষণ শুধু অগ্নিঝরা মার্চকে কেন্দ্র করে নয়; দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিসমাপ্তি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পরিপূর্ণ স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জনে অভূতপূর্ব দিক নির্দেশনার সুনিপুণ ক্রোড়পত্র। ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকে শুধু বাঙালি জাতির জনক নয়; পৃথিবী নামক এই গ্রহের সকল শোষণ-বঞ্চনা-পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তির অন্যতম ত্রাতা হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মহামান্য হাইকোর্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবেশিত করা, এখনকার প্রজন্মকে এই ভাষণ শোনানো এবং ঐতিহাসিক এই ভাষণের আধেয় জানানো উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সম্মানিত বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে ঐতিহাসিক ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করে গেজেট জারির নির্দেশ দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর এই নির্ভীক-সাহসিক ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা শুধু বঙ্গবন্ধুকে নয়, বাঙালি জাতিকেও বৈশ্বিক স্বাধীনতার ইতিহাসে আকাশচুম্বী গৌরব ও মহিমায় অধিষ্ঠিত করেছে। পরবর্তীকালে প্রমাণিত সত্য যে, এই ভাষণ বিশ্বের সকল জাতির মুক্তি সংগ্রামে অবদান রাখার জন্যে যুগান্তকারী-যুগোপযোগী-আধুনিক-বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-চেতনার সমারোহে সামষ্টিক প্রণোদনা ঋদ্ধ দিকনির্দেশনায় পরিপূর্ণ। সাম্প্রতিক কালে বৈরী মনোভাবের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান-দলের পক্ষ থেকেও ৭ মার্চকে ধারণ করার বিষয়টি অবিনাশী আদর্শিক চেতনার সর্ব-বিশ্বজনীন অমূল্য দলিল পরিগ্রহে রূপান্তরিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক আত্মপ্রত্যয়-আত্মনিয়ন্ত্রণ-সার্বিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার গ্রহণযোগ্য অসামান্য ঐতিহ্যরূপে এই ভাষণ-নির্যাস সর্বত্রই সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্য। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অন্যতম বিশ্বশ্রেষ্ঠ ও অতুলনীয় গৌরবগাঁথার প্রণিধানযোগ্য পাঠ্যক্রম হওয়ার গবেষণা কালের আবর্তনে অব্যাহত থাকবে – নিঃসন্দেহে তা বলা যায়। ভাষণের পটভূমি, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, আর্থ-সামাজিক বৈষম্যের নির্মম বেড়াজাল এবং সর্বোপরি দেশবাসীর করণীয় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর অমিয়-তেজোদীপ্ত বাণী-নির্দেশনাসমূহ হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত করা না গেলে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক পাঠোদ্ধার, যথার্থ অনুধাবন ও উপলব্ধিতে ধারণ করা নিতান্তই দুরূহ। তরুণ প্রজন্মের বোধোদয়ে অতুলনীয় এই ভাষণ অত্যুজ্জ্বল করার উদ্দেশ্যেই বারংবার এটির বিশ্লেষণ ও প্রচার নিরন্তর অত্যাবশ্যকীয় বিষয় হওয়া প্রয়োজন।
লেখক: শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।