প্রান্তিক কৃষকদের নামে ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে আত্মসাৎ, ঋণ বিতরণে অনিয়মসহ নানা অভিযোগে রাঙামাটির লংগদু উপজেলা কৃষি ব্যাংকে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় দুদক রাঙামাটি কার্যালয়ের ৫ সদস্যের একটি তদন্ত দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তারা জানান, কৃষি ব্যাংকের বিরুদ্ধে পাওয়া অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগগুলো দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রাথমিক তদন্তে ৭ কোটি টাকার অধিক অর্থ কেলেঙ্কারির তথ্য মিলেছে। কৃষকদের নামে ভুয়া ঋণ এবং কৃষি প্রণোদনা বিতরণের নামে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি দালাল চক্র। দুর্নীতি দমন কমিশনে কৃষকদের দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১–২০২৩ পর্যন্ত উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের শতাধিক কৃষকের কাছ থেকে কৃষি প্রণোদনার কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি সংগ্রহ করে একটি দালাল চক্র। পরে তাদের নামে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় ৩৫–৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ উত্তোলন করে দালাল চক্র। কিন্তু ঋণের তথ্য গোপন রেখে কৃষি প্রণোদনার কথা বলে কৃষকদের হাতে দেয়া হয় মাত্র দুই হাজার টাকা। বাকি অর্থ আত্মসাৎ করে দালাল চক্র গা ঢাকা দেয়। বর্তমানে এ খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে বরাদ্দ ঋণের অর্থ নামে–বেনামে বিতরণ করার ঘটনাও ঘটে।
গতকালের অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাঙামাটি সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহমেদ ফরহাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ, সহকারী পরিদর্শক আবু ছাদেক এবং উপসহকারী পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা আহমেদ ফরহাদ হোসেন বলেন, ঋণ বিতরণে ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে স্থানীয় দালাল চক্রসহ ব্যাংকের যে সকল কর্মকর্তা জড়িত তাদের পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লংগদু শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইমাম উদ্দিন জানান, আজ (রোববার) সকালে দুদকের একটি টিম আমাদের ব্যাংক পরিদর্শনে আসে। তারা মূলত ২০২১–২০২৩ সাল পর্যন্ত দুই অর্থবছরে বিতরণ করা কৃষি ঋণের অনিয়মের একটি অভিযোগ তদন্ত করতে আসেন। আমরা প্রয়োজনীয় নথি ও সে সময়ে দায়িত্বে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের তথ্য তাদেরকে দিয়েছি। তারা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।












