বাংলাদেশের ক্রিকেটে অন্যতম প্রতিভাবান হিসেবে ভাবা হতো ইয়াসির আলি রাব্বিকে। কিন্তু জাতীয় দলে নিজেকে ঠিক সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি। পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও ঠিক চেনা রাব্বিকে দেখা যাচ্ছিলনা ধীর্ঘ দিন ধরে। তবে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিজেকে যেন মেলে ধরছেন রাব্বি। লিস্ট ‘এ‘ ক্রিকেটে প্রায় ৬ বছর ও ৫৯ ইনিংস পর তিন অঙ্কের দেখা পেলেন মিডল–অর্ডার ব্যাটসম্যান। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের শতরান ছাড়িয়ে তিনি এগিয়ে গেলেন আরও অনেকটা পথ। লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জের বিপক্ষে বিকেএসপিতে গতকাল শুক্রবার ষষ্ঠ ওভারে ক্রিজে গিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ইয়াসির করেন ১২১ বলে ১৪৩ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি সাজান তিনি ৭টি করে চার এবং ছক্কায় । লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। ২০১৯ সালের প্রিমিয়ার লিগে সবশেষ শতরান করেছিলেন ইয়াসির। ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে আবাহনীর লিমিটেডের বিপক্ষে সেদিন ১০৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এত দিন সেটিই ছিল লিস্ট ‘এ‘ ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ। এবারের লিগে প্রথম ম্যাচেও ভালো কিছুর আভাস দিলেও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি। সেদিন ২টি করে চার–ছক্কায় ৪১ রান করে ফিরে যান ড্রেসিং রুমে। এবার দলের বিপদের সময়েই তিনি খেললেন চলতি লিগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ২০২২ সালে আফগানিস্তান সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক ইয়াসিরের। বছর ঘুরতেই দল থেকে বাদও পড়ে যান তিনি। মাঝের সময়ে ৭ ইনিংসে এক ফিফটিতে করেছেন মোটে ১০২ রান।
মুশফিকুর রহিমের অবসরে জাতীয় দলের মিডল–অর্ডারে তৈরি হয়েছে শূন্যতা। সেই জায়গা নেওয়ার আশায় থাকবেন ইয়াসিরও। লিগের শুরুটা যেমন করলেন তিনি, ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে ২৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানকেও হয়তো বিবেচনায় রাখবেন নির্বাচকরা। রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ৬ ওভারের মধ্যে ধানমন্ডির দুই ওপেনারের বিদায়ে ক্রিজে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর ড্রেসিং রুমে ফিরে যান ফজলে মাহমুদও। চাপের সময়ে শুরুতে কিছুটা সময় নেন ইয়াসির। নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে ৭৩ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন তিনি। যেখানে সোহানের অবদান ৩৩ রান। দলের একশ পেরিয়ে অধিনায়কের বিদায়ে পুরো দায়িত্ব বর্তায় ইয়াসিরের কাঁধে। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে সৌভাগ্যের ছোঁয়া পান তিনি। তানভির ইসলামের বলে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন জাকের আলি। এরপর শেখ মেহেদি হাসানের বলে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন ৭৩ বলে। এরপর ইনিংসের গতি বদলের শুরু। পরের পঞ্চাশ করতে লাগে আর মাত্র ২৪ বল। তানভির ও রেজাউর রহমান রাজার বল ছক্কায় ওড়ান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। সৌম্যর বলে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৯৭ বলে। শতক ছুঁয়ে ইয়াসিরের ব্যাট থেকে আসে আরও ৩টি ছক্কা। ইয়াসিরের সেঞ্চুরির সঙ্গে মইনের ফিফটি ও জিয়ার তাণ্ডবে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ৩৩২ রান করে ধানমন্ডি।