৫৫৫ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ সংস্কার অচিরেই শুরু হচ্ছে

খানখানাবাদে ভাঙনের কবলে নতুন এলাকা

কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী | বুধবার , ৩১ জুলাই, ২০২৪ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় অচিরেই শুরু হচ্ছে ৫৫৫ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ সংস্কার কার্যক্রম। তাতে বাহারছড়া ইউনিয়নের তিনটি প্যাকেজে এক হাজার মিটার বাঁধ, খানখানাবাদ ইউনিয়নে, ছনুয়া ইউনিয়নে, বাহারছড়া ইউনিয়নে এবং সাধনপুর ইউনিয়নের পুরানো বাঁধ শক্তিশালীকরণ, সাগরতীর ভাঙন রোধকরণ করা হবে। অপরদিকে সাধনপুর ইউনিয়নের সাঙ্গু নদীর মোহনায় নদীর তীর ভাঙন রোধে কাজ করা হবে বলে জানা যায়।

সূত্র জানায়, পানি উন্নয়নের বোর্ডের বাঁশখালী অংশে প্রকল্পের জিও (সরকারি আদেশ) অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। গত ২৭ মে একনেকের সভায় অনুমোদন করা প্রকল্পটি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদনের পর অচিরেই টেন্ডার প্রক্রিয়া করা হবে বলে। বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার (প্রথম পর্যায় প্রকল্প) আওতায় বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কারে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫৫৫ কোটি টাকা। এদিকে উপকূলীয় খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, কদমরসুল এলাকার প্রায় ১০০ মিটার জায়গা বার বার ভাঙনের কবলে পড়ে। ডাম্পিং ছাড়া জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ করলে তা বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এ কদমরসুল এলাকায় স্থায়ী কোনো কাজ করা হচ্ছে না। প্রতিটি দুর্যোগে কদমরসুল এলাকার ৪ হাজার জনগণ প্রায় সময় দুচিন্তায় থাকেন।

কদমরসুল এলাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শোয়াইব বলেন, কদমরসুল এবং খানখানাবাদ এলাকায় প্রায় ১৩৫ চেইন এলাকা ঝুঁকিপুর্ণ বেড়িবাঁধ। সামান্য বৃষ্টি হলেই জোয়ারের পানি প্রবেশ করবে এ শঙ্কায় থাকে সাধারণ জনগণ।

স্থানীয়রা জানান, বিগত দিনে প্রায় ৩০০ কোটির বেড়িবাঁধের উন্নয়ন কাজ হলেও সঠিক তদারকি না করায় এখন সব ব্লক খসে পড়ে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এছাড়া কদমরসুল এলাকায় বর্তমানে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও তা শেষ হয়নি। ৩ মাস আগে শুরু করা কাজ শেষ না হওয়াতে নতুন নতুন এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ছে। অথচ ভাঙন শুরু হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে ৩৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, খানখানাবাদের বেড়িবাঁধ সংস্কারে যে কাজ চলমান রয়েছে তা এখনও শেষ হয়নি। বরাদ্দ কত এবং কী পরিমাণ জিও ব্যাগ বাঁধে দেওয়া হয়েছে তা এখন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে তিনি জানান। তবে বিস্তারিত জানার জন্য তার কার্যালয়ে যেতে বলেন এ কর্মকর্তা।

বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি অনুমোদনের পর দ্রুত যাতে কাজ শুরু হয় সেজন্য পানি বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। ইতোমধ্যে জিও অনুমোদন হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করার পরপরই শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরুর তাগিদ দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়ে সে বিষয়ে আমার অবস্থান আমি বলে দিয়েছি। আগের প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে যে দুঃখ মানুষ পেয়েছে এরকম কোনো অনিয়ম যেন এ প্রকল্পে না হয় তা সুষ্পষ্টভাবে সংশ্লিষ্টদের বলেছি। আশা করি সুন্দরভাবে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মিত হবে পশ্চিম বাঁশখালীর উপকূলে। এটি নির্মিত হলে পর্যটনের বিকাশ ঘটবে এবং উপকূলবাসীর আতঙ্ক কেটে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধথেমে গেল জুয়েলের কণ্ঠ
পরবর্তী নিবন্ধজামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের পাশাপাশি তাদের অর্থের উৎস বন্ধ করতে হবে