৫১ বছরের অপেক্ষার অবসান

দীঘিনালায় ২শ ৫০ পরিবার পেল সুপেয় পানি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | সোমবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:২০ পূর্বাহ্ণ

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫শ ফুট উঁচু গ্রাম দীঘিনালার নয়মাইল। দীঘিনালাখাগড়াছড়ি সড়কের লাগোয়া এই গ্রামে অন্তত ২শ ৫০ পরিবারের বসবাস। শুষ্ক মৌসুম শুরু হলেই এখানে সুপেয় পানির তীব্র সংকট শুরু হয়। তবে এই মৌসুম থেকে সেই সংকট দূর হলো। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় সুপেয় পানি পাচ্ছে ২শ ৫০ পরিবার। গতকাল প্রকল্প উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এর মধ্য দিয়ে ৫১ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। রুরাল পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় লেগেছে ১ বছর।

নয়মাইল এলাকার বাসিন্দা কবিতা ত্রিপুরা জানান, সড়কের পাশে আমাদের গ্রাম। কিন্ত পাহাড়ি উঁচু গ্রাম হওয়ায় এখানে তীব্র পানিসংকট থাকে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ঝিরি থেকে কলসিতে পানি সংগ্রহ করতে হয়। ১২ কিলোমিটার দূর থেকে পানির সংগ্রহ করতে হয়। অবশেষে আমাদের কষ্টের দিন শেষ হলো। জনস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে এখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামের মানুষ ঘরে ঘরে পানি পাচ্ছে।

নয়মাইল এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য গণেশ ত্রিপুরা বলেন, অনেক দিন পরও হলে আমরা সুপেয় পানি পাচ্ছি। পানির জন্য আমাদের সারা বছর কষ্ট করতে হতো। এখন থেকে তা আর করতে হবে না। পাইপলাইনের মাধ্যমে ৫০টি পয়েন্ট করা হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে সারা দিন পানি পাওয়া যাচ্ছে। সেসব পয়েন্ট থেকে গ্রামের মানুষ পানি সংগ্রহ করছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রেবাকা আহসান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখানে মানুষের পানির কষ্ট ছিল। শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যেত না। বিশেষ করে সুপেয় পানির তীব্র সংকট ছিল। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সক্ষমতা বেড়েছে। আমরা বড় প্রকল্প নিতে পেরেছি। প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে এখানকার মানুষের পানির সংকট নিরসনের গভীর নলকূপ স্থাপন করেছি। পাথুরে পাহাড় হওয়ার কারণে পানির স্তর পাওয়া কষ্টসাধ্য ছিল। একটি পাইপ হাউস স্থাপন করেছি। প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বিশ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। জলাধার থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে। স্থানীয় কমিটি এটি রক্ষণাবেক্ষণ করবে।

রুরাল পাইপ ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম উদ্বোধনের সময় খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, নিরাপদ সুপেয় পানির জন্য এলাকার মানুষের হাহাকার ছিল। আগের এখানে পানির জন্য কূপ খনন করেছিল। কিন্ত পানি পাওয়া যায়নি। মূলত পাথুরে পাহাড় হওয়ার কারণে পানির স্তর পাওয়া যেত না। তবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চেষ্টা করেছে এবং তারা সফল হয়েছে। অন্যান্য দুর্গম এলাকাগুলোর পানির সংকট নিরসনে প্রকল্প চলমান রয়েছে।

উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুপ্রু চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল ও অ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাশেম প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০ কেজি রান্না করা বাসি মাছ-মাংস ধ্বংস
পরবর্তী নিবন্ধশীতের তীব্রতায় বাড়ল লেপ তোশকের চাহিদা