৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকাদান পুরোদমে শুরু

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৬ আগস্ট, ২০২২ at ৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ

করোনা প্রতিরোধে চট্টগ্রামে ৫-১১ বছরের (১২ বছরের কম বয়সী) শিশুদের টিকাদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় গত বুধবার। নগরীর মিউনিসিপ্যাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সিটি মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম শিশুদের এ টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন সবমিলিয়ে ৩০০ শিক্ষার্থীকে ওই স্কুলে টিকা প্রয়োগ করা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল থেকে সিটিকর্পোরেশন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পুরোদমে এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে (গতকাল) সিটিকর্পোরেশন এলাকার ১৫ হাজারেরও বেশি শিশু শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে। স্কুলে স্কুলে গিয়েই খুদে শিক্ষার্থীদের এ টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে।
চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নাসিম ভূইঞা আজাদীকে বলেন, শিশুদের টিকা প্রয়োগ পুরোদমে শুরু হয়েছে। সিটিকর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে চারটি করে টিম এ টিকা প্রয়োগ করছে। প্রতি টিমে দুজন করে টিকাদান কর্মী রয়েছে। সিটিকর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে সবমিলিয়ে ১৬৪টি টিম টিকা প্রয়োগে কাজ করছে। শিশুদের প্রথম ডোজ টিকাদানে মন্ত্রণালয় থেকে ১২ দিনের একটি সময়সীমা উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একই সাথে টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসাসহ সিটিকর্পোরেশন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সবমিলিয়ে প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলেও জানান চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকাদান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হলেও প্রাথমিকের শিশু শিক্ষার্থীদের এ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৫-১১ বছরের শিশুদের ফাইজারের বিশেষ ধরণের টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। টিকা পেতে এই বয়সী শিশুদের জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করতে হচ্ছে। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন না হলে টিকা নেয়া যাবে না। তাই যাদের এখনো জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়নি, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহবান জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। শিক্ষার্থীদের টিকাদানে করণীয় বিষয়ে সমপ্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও বেশ কয়দফা নির্দেশনা জারি করে। শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধনে শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। জন্ম নিবন্ধন দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে গেলে টিকাদান কেন্দ্র সিলেক্ট করতে হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্র হিসেবে থাকা যে কোন একটি হাসপাতাল সিলেক্ট করলেই চলবে। এটি শুধু নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্নের জন্যই। শিশুদের স্কুলে স্কুলে গিয়েই এ টিকা দেয়া হবে। তাই কেন্দ্রের বিষয়টি নিয়ে কোন জটিলতা হবেনা বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী- জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি। এসব প্রতিষ্ঠানে ৫-১২ বছর বয়সী (১ম-৫ম শ্রেণির) শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৯ জন। এছাড়া বেসরকারি স্কুলগুলোতে এই বয়সী আরো ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সবমিলিয়ে জেলার ৫-১২ বছর বয়সী মোট ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঢাকায় পাঠানো হয়। আর সিটিকর্পোরেশন এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২১৫টি। যদিও মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেনের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে প্রাথমিক, কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসাসহ সিটিকর্পোরেশন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫-১১ বছর বয়সী প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমধ্য সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ ও উত্তর জেলার কমিটি ঘোষণা, সময় লাগবে মহানগরে
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে স্ত্রীর সামনে শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা