৪৪ টাকায় আপেল ও ৬৬ টাকায় কমলা বিক্রি

চট্টগ্রাম কাস্টমসে তিনদিনব্যাপী প্রকাশ্য নিলাম

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ১১ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে তিনদিনব্যাপী প্রকাশ্য নিলামে প্রতি কেজি আপেলের দাম উঠেছে ৪৪ টাকা। এছাড়া কমলার কেজি ৬৬ টাকা এবং প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হয়েছে ৭৩৬ টাকায়। তবে ১৭৮ টন মেন্ডারিন নিলামে তোলা হলেও কেউ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেনি। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার প্রকাশ্য নিলামে ৪০ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৪ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৪৬২ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) কমলা হয়েছে বিক্রি হয়েছে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬৬ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছে হালিশহর এলাকার মাসুম এন্টারপ্রাইজ। এছাড়া একইদিন ৮৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৯৬ টাকা মূল্যের ৪৭ হাজার ৪৪০ কেজি (প্রায় সাড়ে ৪৭ টন) লাল আপেল বিক্রি হয়েছে ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৫৮ টাকায়। সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছে নগরীর ফলমণ্ডির হোসাইন ট্রেডিং। এছাড়া ৪১ লাখ ২০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৭২০ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) আপেল বিক্রি হয়েছে ১৬ লাখ ৫ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬৭ টাকা। এটিরও সর্বোচ্চ দরদাতা হন হোসাইন ট্রেডিং। অপরদিকে ৪১ লাখ ২০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৭২০ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) আপেল বিক্রি হয়েছে ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬৪ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন বন্দর এলাকার এসএ ট্রেডিং। এছাড়া গত মঙ্গলবার ৪১ লাখ ২০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৭২০ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) আপেল বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৪৪ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয় মাসুম এন্টারপ্রাইজ। এছাড়া একইদিন ৪১ লাখ ২০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৭২০ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) আপেল বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬০ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয় নগরীর ফলমন্ডির হোসাইন ট্রেডিং। এছাড়া গতকাল বুধবার প্রকাশ্য নিলামে ৪১ লাখ ২০ হাজার ৯০৭ টাকা মূল্যের ২৩ হাজার ৭২০ কেজি (সাড়ে ২৩ টন) আপেল বিক্রি হয়েছে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৫৫ টাকায়। সর্বোচ্চ দরদাতা হন জামালখান এলাকার ইয়াকুব চৌধুরী। অপরদিকে ১ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার ৯২৪ টাকা মূল্যের ২৫ টন খেজুর বিক্রি হয়েছে ৭০ লাখ টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৭৩৬ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন রিয়াজউদ্দিন বাজারের নুরুল আবছার। এছাড়া ৮৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৯৬ টাকা মূল্যের ৪৭ হাজার ৪৪০ কেজি (প্রায় সাড়ে ৪৭ টন) লাল আপেল বিক্রি হয়েছে ৩২ লাখ টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬৭ টাকা। সর্বোচ্চ দরদাতা হন রিয়াজউদ্দিন বাজারের নুরুল আবছার। এছাড়া ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৪ টাকা মূল্যের ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি (প্রায় ২৫ টন) কমলা বিক্রি হয়েছে ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকায়। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৬৮ টাকায়। সর্বোচ্চ দরদাতা হন নগরীর পাথরঘাটার মেসার্স মঈন উদ্দিন ট্রেডিং।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পচনশীল পণ্যের নিলামের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপকমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা পচনশীল পণ্য দ্রুত নিলাম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেই লক্ষ্যে আজসহ (গতকাল) টানা তিনদিন প্রকাশ্য নিলাম সম্পন্ন করা হয়েছে।

জানা গেছে, পচনশীল পণ্যের দ্রুত নিলাম আয়োজনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থায়ী আদেশ জারি করে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিগত সময়ে অনেক খাদ্যপণ্য পচে যাওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাওয়া দূরে থাক, উল্টো পণ্য ধ্বংসে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়ে তদন্ত করতে দুদকে পিএসসির চিঠি
পরবর্তী নিবন্ধ৮ আসামির ৭ বছর করে কারাদণ্ড