দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ বোলিং করার পরই উইকেটে দেখা গেল বুটের দাগ। স্পষ্ট হয়ে গেল, বোলারদের জন্য এখানে থাকবে বাড়তি সুবিধা। যা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান মোস্তাফিজুর রহমান। একইসঙ্গে গড়লেন দেশের সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের রেকর্ড। মিরপুর শের–ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল রোববার স্লোয়ার, কাটার ও গতির তারতম্যে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলাই করেন মোস্তাফিজ। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে খরচ করেন মাত্র ৬ রান। বিপরীতে নেন ২ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে পূর্ণ কোটা বোলিং করে বাংলাদেশের কোনো বোলারের সবচেয়ে কম রান খরচের রেকর্ড এটি। আগের রেকর্ডেও ছিল মোস্তাফিজের নাম। গত বছর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেপালের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৭ রানে ৩ উইকেট নেন অভিজ্ঞ পেসার। একই ম্যাচে ৪ ওভারে ২ মেডেনসহ ৭ রানে ৪ উইকেট পান তানজিম হাসান। একই বছর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৭ রানে ১ উইকেট নেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। এই সংস্করণে এ নিয়ে চার ম্যাচে ১০ রানের কম খরচ করলেন মোস্তাফিজ। বাংলাদেশ তো বটেই, আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যেই পূর্ণ ৪ ওভার বোলিং করে চার ম্যাচে ১০ রানের কম খরচের রেকর্ড নেই কোনো বোলারের।
তিনবার করে ম্যাচে ১০ রানের কম খরচ করেছেন সাকিব আল হাসান, ভুবনেশ্বর কুমার ও ইমাদ ওয়াসিম। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলে সিঙ্গেল দেন মোস্তাফিজ। পরের পাঁচ বলে আর রান নিতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। পঞ্চম বলে বড় শটের খোঁজে ডিপ থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন হাসান নাওয়াজ। ১২তম ওভারে তাকে আক্রমণে ফেরান লিটন কুমার দাস। এবার খরচ করেন ২ রান। তার স্লোয়ার ও কাটারে একরকম অসহায়ই মনে হয় খুশদিল শাহকে। ওই ওভারে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন ফাখার জামান। ডেথ ওভারে আবার বোলিংয়ে আসেন মোস্তাফিজ। ১৭তম ওভারে দ্বিতীয় বলে খুশদিলকে আউট করেন তিনি। পরের বলে ফাহিম আশরাফের উইকেটও পেতে পারতেন অভিজ্ঞ পেসার। কিন্তু লিটন রিভিউ না নেওয়ায় বৃথা যায় সুযোগ।
এই ওভারেও খরচ ২ রান। ১৯তম ওভারেও চমৎকার বোলিং করেন মোস্তাফিজ। ওই ওভারে কোনো উইকেট না পেলেও ১ রানের বেশি দেননি। ব্যাটসম্যানদের বোতলবন্দী রেখে সব মিলিয়ে ১৮টি ডট বল করেন মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজের রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে পাকিস্তানকে টি–টোয়েন্টিতে প্রথমবার অল আউট করে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে একটি রান আউটসহ তিন বলে তিন উইকেট হারিয়ে ১১০ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন দুবার জীবন পাওয়া ফাখার জামান। শেষ দিকে ৩ ছক্কায় ২৪ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলেন আব্বাস আফ্রিদি। প্রথম ওভারে ফাখারের ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া তাসকিন আহমেদ ২২ রানে নেন ৩ উইকেট।