৩৬ বছর পর চবিতে আসছেন ড. ইউনূস

যা যা থাকছে আয়োজনে

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৪ মে, ২০২৫ at ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের ইতিহাসে একই স্থানে সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে আয়োজিত সমাবর্তন। এতে অংশ নিচ্ছেন ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে চবিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী। সমাবর্তনের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ঐতিহাসিক আয়োজনে গৌরব যুক্ত করবেন চবির প্রাক্তন শিক্ষক প্রফেসর ড. ইউনূস, যাঁকে এ অনুষ্ঠানে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। প্রায় ৩৬ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পা রাখতে যাচ্ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই মহাআয়োজনটি অনুষ্ঠিত হবে আজ দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। এ আয়োজনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে গত এক মাস ধরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সব স্তরের নিরাপত্তা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার লোকবল রয়েছে ক্যাম্পসজুড়ে। পুরো ক্যাম্পাস যেন নিরাপত্তার আবরণে ঢাকা। সমাবর্তন আয়োজনের আনুমানিক ব্যয় প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আয়োজন সফল করতে গঠন করা হয়েছে ১৯টি উপকমিটি। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের। শিক্ষার্থীদের সিঙ্গেল লাইনে প্রবেশ করতে হবে এবং দুপুর ১টার পর কাউকে মূল অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। ব্যক্তিগত যানবাহনের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে থাকবে পার্কিং এবং বাস ট্রান্সফারের ব্যবস্থা। যাতায়াতের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাড়বে ১০০টি বিশেষ বাস এবং চলবে ৪টি বিশেষ শাটল ট্রেন। অভ্যন্তরীণ চলাচলের জন্য থাকবে শাটল বাস সার্ভিস। সমাবর্তন শিক্ষার্থীরা গত সোমবার থেকে নিজ নিজ বিভাগ থেকে গাউন ও টুপি সংগ্রহ করছেন।

আজ সকাল ৭টা থেকেও এগুলো সংগ্রহ করা যাবে। অনুষ্ঠান শেষে গাউন জমা দিয়ে শিক্ষার্থীরা সনদ ও উপহার সামগ্রী গ্রহণ করবেন। এবারের সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৬ হাজার উপহার সামগ্রী। প্রতিটি কম্বো বঙে থাকবে: একটি জুটের ব্যাগ, কোর্ট পিন, কলম, মোবাইল ওয়ালেট। সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সমপ্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। যারা মূল মাঠে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, তাদের জন্য শহীদ মিনার, জারুলতলা, সায়েন্স ফ্যাকাল্টি চত্বরসহ পাঁচটি স্থানে থাকবে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি সমপ্রচারের ব্যবস্থা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে, অতিথিবৃন্দের আসন গ্রহণের মাধ্যমে। এরপর ১টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে সমাবর্তন শোভাযাত্রা। বিকেল ২টা থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হবে এবং ২টা ৫ মিনিটে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হবে। ২টা ১৫ মিনিটে সমাবর্তনের সভাপতি ও ভাইসচ্যান্সেলর সমাবর্তনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। পরবর্তী সময়ে, ২টা ১৬ মিনিটে প্রো ভিসি (শিক্ষা) স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন। এরপর, বিকেল ২টা ২০ মিনিটে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি.লিট. ডিগ্রি প্রদান করা হবে এবং ২টা ৩০ মিনিটে ভিসি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করবেন। ৩টা থেকে উপউপাচার্য (প্রশাসন) শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন, এবং এরপর যথাক্রমে ইউজিসি চেয়ারম্যান, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সমাবর্তন বক্তা বক্তব্য প্রদান করবেন।

বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। এরপর ৩টা ৫০ মিনিটে সভাপতি তাঁর বক্তব্য প্রদান করে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন। অনুষ্ঠান শেষ হবে ৪টা থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও ৪টা ১ মিনিটে সমাবর্তন বক্তার প্রস্থান করার মাধ্যমে। সমাবর্তন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও চবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, একক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এটি দেশের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন। সবাই যেন নিয়মতান্ত্রিকভাবে অংশগ্রহণ করেন, এটাই প্রত্যাশা। সমাবর্তনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জরুরি নির্দেশনাগুলো দেওয়া থাকবে, সেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা মানবসৃষ্ট, নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই
পরবর্তী নিবন্ধচবির পঞ্চম সমাবর্তন আজ উৎসবমুখর ক্যাম্পাস