৩৪ বছর পর বন্দর থানায় যুবদলের সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া থানা প্রতিষ্ঠার পর প্রথম বার আকবর শাহ, পতেঙ্গা, ইপিজেড ও সদরঘাট থানায় কমিটি হয়েছে সংগঠনটির। নগর যুবদলের আওতাধীন এ পাঁচ থানায় গতকাল শনিবার আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে নগরের ১০টি থানায় সাংগঠনিক কমিটি হলো যুবদলের। এদিকে বর্তমানে পাঁচ থানা ও ১৫টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে কমিটি নেই যুবদলের। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ১৯৭৯ সালে ও ডবলমুরিংয়ে ১৯৯৮ সালে দুই বছরের জন্য সর্বশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এছাড়া ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হালিশহর থানা ও বাকলিয়া থানা এবং ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত চকবাজার থানায় কখনো কমিটি গঠন করা হয়নি। আগামী সপ্তাহে থানাগুলোর কমিটি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
এছাড়া কমিটিহীন ২৮ ওয়ার্ড হচ্ছে বাগমনিরাম, চকবাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, পূর্ব বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, দেওয়ান বাজার, জামালখান, এনায়েত বাজার, উত্তর পাঠানটুলি, উত্তর আগ্রাবাদ, রামপুর, উত্তর হালিশহর, দক্ষিণ আগ্রাবাদ, পাঠানটুলি, পশ্চিম মাদারবাড়ী, পূর্ব মাদারবাড়ী, আলকরণ, আন্দরকিল্লা, ফিরিঙ্গিবাজার, পাথরঘাটা, বক্সিরহাট, গোসাইলডাঙ্গা, উত্তর মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ হালিশহর, উত্তর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড।
পাঁচ থানায় নতুন নেতৃত্ব : মো. শফিউল আজমকে আহ্বায়ক ও মো. ইয়াছিনকে সদস্য সচিব করে গতকাল বন্দর থানায় ঘোষিত কমিটির আকার ৪৮ সদস্যের। এছাড়া মো. ইসমাইলকে আহ্বায়ক ও নুর খানকে সদস্য সচিব করে ৩৯ সদস্যের সদরঘাট থানা, জিয়াউর রহমান জিয়াকে আহ্বায়ক ও নুরুদ্দিন শরীফ দিদারকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩৫ সদস্যের ইপিজেড থানা, মো. খোরশেদ আলমকে আহ্বায়ক ও মোহাম্মদ হোসেন রানাকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে ২২ সদস্যের এবং মো. গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও শহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্যের আকবর শাহ থানা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে ১৯৮৭ সালে বন্দর থানায় দুই বছরের জন্য যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এছাড়া ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আকবর শাহ, ইপিজেড, সদরঘাট ও পতেঙ্গা থানায় গতকালের পূর্বে কখনো সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়নি। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পর থানা চারটিতে সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের জটিলতা : ২০১২ সালে নগরে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডের সাংগঠনিক কমিটি বিলুপ্তি করেন নগর যুবদলের তৎকালীন সভাপতি কাজী বেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন দিপ্তী। এরপর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে পারেনি বিভিন্ন সময়ে নেতৃত্ব দেয়া যুবদলের মহানগর নেতৃবৃন্দ। অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কমিটি না থাকার অপবাদ ঘুচানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটির বর্তমান নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ জুন কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল পাঁচ সদস্যের মহানগর যুবদলের বিদ্যমান কমিটি। এতে মোশাররফ হোসেন দিপ্তীকে সভাপতি এবং মো. শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে একই বছরের ৪ অক্টোবর ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
এ কমিটিকে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সময়ে তাগাদা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই ৫টি থানা তথা বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও, খুলশী ও পাহাড়তলীতে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই দিন ১৫টি ওয়ার্ড তথা জালালাবাদ, পাঁচলাইশ চান্দগাঁও, মোহরা, পূর্ব ষোলশহর, পশ্চিম ষোলশহর, শুলকবহর, উত্তর পাহাড়তলী, উত্তর কাট্টলী, দক্ষিণ কাট্টলী, সরাইপাড়া, পাহাড়তলী, লালখান বাজার, নাসিরাবাদ ও আমিন শিল্পাঞ্চল সাংগঠনিক ওয়ার্ডেও কমিটি করা হয়।
নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগে পাঁচটি থানা ও ১৫ ওয়ার্ডে কমিটি করেছিলাম। আজ (গতকাল) পাঁচটি থানার কমিটি কেন্দ্র অনুমোদন দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে বাকি পাঁচ থানায় ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া পশ্চিম মাদারবাড়ী, গোসাইলডাঙ্গা, উত্তর মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ হালিশহর, উত্তর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড কমিটিও প্রায় চূড়ান্ত করেছি। আশা করছি, বাকি থানাগুলোর সাথে ওয়ার্ডগুলোর কমিটিও ঘোষণা করব।
ইতোপূর্বে ঘোষিত কমিটি নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটিতে কাউকে বাদ দেয়া হয়নি। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এছাড়া সিনিয়রদের পরামর্শ মেনে কমিটি করা হয়েছে। আমরা কেন্দ্রে জমা দেয়ার পর কেন্দ্রীয় টিম সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেছে। কাজেই কমিটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নাই।