লিকুফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) দেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প হিসেবে গড়ে উঠছে। ৮-১০ বছরে ঈর্ষণীয়ভাবে বিনিয়োগ হয়েছে এ খাতে। বর্তমানে দেশের এলপিজির চাহিদার ৯৮ শতাংশ আমদানির মাধ্যমে মেটানো হচ্ছে। এলপিজি সেক্টরে বর্তমানে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা দ্রুত সম্প্রসারণশীল এলপিজি সেক্টরের বিনিয়োগকে নিরাপদ করতে সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হয়েছে বাংলাদেশ। জাতীয় প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে আশানুরূপভাবে। বাড়ছে দেশের অর্থনীতির পরিধিও। এতে মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটছে। ধীরে ধীরে কমে আসছে গ্রামের সাথে নগর জীবনের তারতম্য। ফলে গ্রামাঞ্চলের মানুষও কাঠ, খড়, কেরোসিনের বদলে গৃহস্থালী জ্বালানি হিসেবে এলপিজি ব্যবহারের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। সরকারিভাবে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসের বিকল্প হয়ে উঠেছে সিলিন্ডার ভর্তি গ্যাস। দিন দিন চাহিদা বাড়ছে এ তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম জ্বালানির। এলপিজির শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের বেশ কয়েকটি চট্টগ্রামের।
জানা যায়, ২০০০ সালের পর থেকে দেশে বোতলজাত এলপি গ্যাসের ব্যবহার শুরু হয়। সময়ের ব্যবধানে এ খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আসেন নতুন নতুন উদ্যোক্তারা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১২ সালে সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানি মিলে মোট এক লাখ টন এলপিজি সরবরাহ করতো। ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোক্তারা বছরে প্রায় ১০ লাখ টনের বেশি এলপিজি আমদানি করছেন। যা দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ। বাকি ২ শতাংশ দেশে উৎপন্ন হয়। তন্মধ্যে সরকারি এলপিজিএল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ২০ হাজার টন বোতলজাত এলপি গ্যাস বাজারে সরবরাহ করেছে। বর্তমানে ৫৭টি অপারেটর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে লাইসেন্স নিলেও ২৭টি অপারেটর বাজারে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করেছে। বাজারে প্রবেশ করছে নতুন নতুন বিনিয়োগকারীরাও। সংশ্লিষ্টদের ধারণা ২০৩০ সালে আবাসিকে এলপিজির চাহিদা ২৫ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এলপিজি খাতটি খুবই জনপ্রিয় ও সম্প্রসারণশীল হওয়ার কারণে নতুন নতুন অপরিকল্পিত বিনিয়োগও আসছে। এতে বিনিয়োগ ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই এ খাতের ঝুঁকি লাগবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে সুষ্ঠ নীতিমালা প্রয়োজন।