৩ জনকে হারিয়ে শোকে পাথর এক পরিবার

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের ছাদকপাড়ার জাফর আলম তার কন্যা রেনু আরাকে (২৭) বিয়ে দিয়েছেন পাশের রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের কালিরছড়ায়। স্বামী হাফেজ জান্নাত উল্লাহ থাকেন প্রবাসে। শ্বশুর বাড়ি থেকে দুই শিশু সন্তান আশেক উল্লাহকে (১৩ মাস) নিয়ে বাপের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। বেড়ানো শেষে ছোটবোন আসমা আরাকেও সাথে নিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছিলেন শ্বশুর বাড়িতে। কিন্তু সেই যাত্রা শেষ হয়নি। যাত্রাপথ অসামপ্ত রেখে মাঝপথেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তারা!

গতকাল শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে কক্সবাজারচট্টগ্রামঢাকা রেলপথের কক্সবাজারের রামুর রশিদনগরে ট্রেনের ধাক্কায় একই পরিবারের এই তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনায় মারা গেলেন তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সার চালক ঈদগাঁও মেহের ঘোনা এলাকার মোহাম্মদ সৈয়দ নুরের ছেলে হাবিব উল্লাহ (৪০)। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা কক্সবাজারে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এসময় বুক চাপড়ে গগণবিদারী কান্না করতে দেখা যায় রেনু আরার পিতা জাফর আলমকে। তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও দুই নাতিসহ আমার বাড়ি থেকে রামুর কালিরছড়া বড় মেয়ের রেনু আরা শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিল। মুহুর্তের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটবে বুঝইে পারিনি। এমন ঘটনা ঘটবে জানলে তাদেরকে আমি যেতে দিতাম না। আমার দুইটি মেয়েকে আমি এক সাথে হারিয়ে ফেলেছি। হারিয়ে গেছে আমার এক আদরের নাতী। এই শূন্যতা আমরা কিভাবে সইব আল্লাহ।’ শুধু জাফর আলম নয়; তিনজন আত্মার আত্মীয়কে এভাবে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে পরিবারের সবাই!

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান জানান, নিহতদের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে দীর্ঘস্থান পর্যন্ত ছিঁড়ে পড়েছে। হাত, পা, মাথা খুলি, শরীরের মাংশসহ বিভিন্ন অংশ ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে। পরে এসব অংশ কুড়িয়ে এক স্থানে করে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্বজনদের কাছে মরদেগুলো হস্তান্তর করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচিত সংসদের হাতে সংস্কার কার্যক্রম ছেড়ে দেব না : নাহিদ
পরবর্তী নিবন্ধএক পরিবারের ৩ জনসহ নিহত ৪