চকরিয়ায় মহাসড়কে সশস্ত্র ডাকাত দলের কবলে পড়ে প্রাণ হারানো বাইক আরোহী মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মাত্র ২২ দিন আগে হারিয়েছেন স্ত্রীকে। তাদের সংসারে রয়েছে দুই অবুঝ শিশু কন্যা। অল্প সময়ের ব্যবধানে একটি পরিবারের এমন করুণ পরিণতি দেখে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন আশেপাশের মানুষ।
জানা যায়, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের স্ত্রী। ঠিক ২২ দিন পর ডাকাতের কবলে পড়ে প্রাণ হারালেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নিজেই। এতে একেবারে এতিম হয়ে গেল সেই অবুঝ শিশু দুইটি। বর্তমানে যে মা–বাবা দুইজনই দুনিয়া থেকে চির বিদায় নিয়েছেন তা এখনো বুঝে ওঠার বয়সও হয়নি তাদের। এই অবস্থায় দুই এতিম শিশুকে (নাতনি) নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছেন নিহত রিয়াদের বাবা মোহাম্মদ নবী হোসেন। বড় কন্যার বয়স এখনো পাঁচ বছর হয়নি। আর ছোট কন্যা তো দুগ্ধপোষ্যই।
মোহাম্মদ নবী হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলেসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে উখিয়ার বালুখালীস্থ শিয়ালিয়া পাড়া থেকে বেড়াতে যাচ্ছিলেন পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার সাজেকে। দুটি মোটর সাইকেলে করে তারা বৃহস্পতিবার রাতে রওনা দেয়। কিন্তু পথিমধ্যে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের জাতীয় উদ্যান এলাকায় গভীর রাতে ডাকাতের কবলে পড়ে প্রাণ হারায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি বলেন, মাত্র ২২ দিন আগে অর্থাৎ গত ২৯ আগস্ট মারা যায় ছেলের বউ। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ২২ দিনের মাথায় ডাকাতের হামলায় চলে গেল ছেলেও। তারা আমার কাছে রেখে গেলে দুই অবুঝ শিশুকে। এখন আমি তাদের নিয়ে কোথায় যাব, কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।
বালুখালী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও রিয়াদের নিকটাত্মীয় মোহাম্মদ ইমরান খান বলেন, আমাদের গ্রামে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা আর দ্বিতীয়টি ঘটেনি। মাত্র ২২ দিনের ব্যবধানে দুইটি শিশু বাবা ও মাকে হারিয়ে চিরতরে এতিম হয়ে গেল চোখের সামনে। তারা ভবিষ্যতে কীভাবে বেড়ে উঠবে, তা নিয়ে আমাদের মাঝেও দুশ্চিন্তা ভর করছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তারসহ খুনিদের বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি এতিম এই দুই শিশুর পাশে সরকার ও প্রশাসনকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।