চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির আসন্ন নির্বাচনে লড়তে গতকাল বিএনপি–জামায়াতপন্থী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ পূর্ণ প্যানেলে তথা ২১ পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে। একইদিন আওয়ামীপন্থী সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গিয়েও তা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদটির প্রার্থীদের নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির সমন্বয়কারী এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন।
সাধারণ আইনজীবীদের মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে নির্বাচন কমিশন অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি উল্লেখ করে এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গেলে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। ভিন্ন একটি প্যানেলের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা এটি করেছে। নানা স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। পরিস্থিতি এমন করা হল যে, আমরা নির্বাচন কমিশনের অফিসে পর্যন্ত ঢুকতে পারিনি। এরপরও আমরা কয়েকবার চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। আমরা এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটি বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। বলেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহবায়ক এ কে এম মকবুল কাদের চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। সেটি আমরা নির্বাচন কমিশন বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। এটা তাদের বিষয়।
মূখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত আমি অফিসে ছিলাম। রশীদ–জাবেদ–মাহতাব পরিষদের কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে আসেননি। বলা হচ্ছে, বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানাননি। তাদের কাছে তো আমাদের ফোন নম্বর রয়েছে। তিনি বলেন, অভিযোগকারী প্যানেলের বাইরে ২১ জন আমাদের কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আমরা তফসিল দিয়েছি। সেই অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রমগুলো এগিয়ে যাবে।
সমিতি সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র সংগ্রহের দিন। আজকে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর আগামীকাল ১২ এপ্রিল মনোনয়নপত্রের বৈধতা সংক্রান্ত আপত্তি শুনানি ও সিদ্ধান্ত এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১৬ এপ্রিল। বিএনপি–জামায়াতপন্থী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকপ্রার্থী মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা ২১ টি পদে অর্থাৎ পূর্ণ প্যানেলে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি।
উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে পদত্যাগ করে। যার প্রেক্ষিতে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সভা করে নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। সমিতি সূত্র জানায়, গঠনতন্ত্রে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা রয়েছে। সেই অনুযায়ী এডহক কমিটি নির্বাচনের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ এপ্রিল ভোট গ্রহণের দিন রেখে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।