২১ খাল ও ১১ প্রকল্প নিয়ে যা বললেন মেয়র

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৭ জুন, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২১ খালের উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়া শহরের যানজট নিরসন, সবুজায়ন, পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধিসহ চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক কীর্তি সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে পৃথক ১১টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলোর ডিপিপি শীঘ্রই মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। এর মধ্যে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল রোববার দুপুরে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাজেট অধিবেশনে এ তথ্য জানান মেয়র।

১১ প্রকল্প : সিটি মেয়রের ঘোষিত ১১ প্রকল্প হচ্ছে, ওশান অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নির্মাণ, যা পিপিপি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন হবে। এ লক্ষ্যে আউটার রিং রোড সংলগ্ন ৩৬ দশমিক ৫৫ একর খাস জমি ভূমি মন্ত্রণালয় হতে লিজ নেয়ার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া চসিকের মালিকানাধীন ঠান্ডাছড়িতে পিপিপি পদ্ধতিতে নগরবাসীর বিনোদন সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক পর্যটন সুবিধা সৃষ্টি, যানজট নিরসন ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ৭টি সড়ক খাজা রোড, কেবি আমান আলী রোড, ওমর আলী মাতব্বর রোড, পলিটেকনিক রোড, ঈশান মহাজন রোড, ফইল্যাতলী বাজার হতে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত নতুন সংযোগ সড়ক ও ইপিজেড হতে মুনির নগর হয়ে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম পর্যন্ত সড়ক পথের সম্প্রসারণ প্রকল্প। নগরের সবুজ মাঠ পুনরুদ্ধারে ও জলাশয় সংস্কারসহ নগরবাসীর বিনোদন সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে, যার ডিপিপি শীঘ্রই মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।

এছাড়া চসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ড কার্যালয় ভবন নির্মাণ ও বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প, স্বাধীনতার ঐতিহাসিক স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণ প্রকল্প, বাকলিয়া এলাকায় জলাধার নির্মাণসহ আবাসন তৈরি প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীতে চরবাকলিয়া এলাকায় জেগে ওঠা বিশাল এলাকায় আধুনিক মানের পর্যটন পার্ক নির্মাণ প্রকল্প, মদুনাঘাট হতে কালুরঘাট ও শাহ আমানত ব্রিজ হয়ে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে নতুন সার্কুলার সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান মেয়র।

খালে লেপ-তোশক : সম্প্রতি পরিদর্শনে গিয়ে খালে মানুষের ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র দেখে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেয়র। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে খাল পরিদর্শনে গিয়ে দেখলাম, ঘরের লেপ-তোশক, সোফা সেট খালে ফেলা হয়েছে। এমন তো হওয়ার কথা না। আমরা অনেক সচেতন করেছি। কিন্তু মানুষ খালে এটা সেটা ফেলে। তাই জরিমানা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অতীতে আমাদের বেশ কিছু আয়বর্ধক প্রকল্প ছিল এবং সেখান থেকে কর্পোরেশনের আয় ও সম্পদের ভিত মজবুত হতো। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে পারিনি। নগরের পরিত্যক্ত জায়গাগুলোকে চিহ্নিত করে কর্পোরেশনের সহযোগিতায় নিম্নআয়ের ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে নগরীর আবাসন সমস্যা কিছুটা হলেও নিরসন হবে।
তিনি বলেন, আমি ৯ নং ওয়ার্ডে একটি অবৈধ দখলকৃত জায়গা উদ্ধার করে ইউএনডিপির সহযোগিতায় শতাধিক গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি। মুজিববর্ষ উপলক্ষে নয়টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে চসিকের সক্ষমতার ভিত মজবুত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চসিকের সকল কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই ও উপায় অন্বেষণের আহ্বান জানিয়েছি। পাশাপাশি এস্টেট শাখাকে চসিকের মালিকানাধীন সম্পত্তির হিসেব প্রকৌশল বিভাগকে জানানোর নির্দেশনা প্রদান করেছি। কাঁচাবাজার, কিচেন মার্কেটসহ নগরীর প্রধান কাঁচাবাজারগুলোকে পর্যায়ক্রমে অত্যাধুনিক ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত পরিবেশ ও ব্যবসাবান্ধব বহুতলবিশিষ্ট কিচেন মার্কেটে পরিণত করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাস্টমসে সিএন্ডএফ এসো’র দুদিনের কর্মবিরতি কাল থেকে
পরবর্তী নিবন্ধসর্বোচ্চ বরাদ্দ নগর উন্নয়নে