হাটহাজারীতে ডাকাতির সময় ডাকাতদের চিনে ফেলায় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি দিদারুল আলম (৪৫)কে ২০ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–৭ এর সদস্যরা। গতকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে চান্দগাঁও র্যাব–৭ এর মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান এই তথ্য জানান। আগের দিন মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ২০০৩ সালের ২৫ নভেম্বর রাত দেড়টার দিকে একদল ডাকাত উপজেলার হাটহাজারী মোহাম্মদপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে সাধারণ লোকজনকে আটক করে তাদের হাত–পা বেঁধে নির্যাতন ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়ার সময় নিহত জাহাঙ্গীর আলম উক্ত রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ডাকাত দল রাস্তা গতিরোধ করে টাকা পয়সা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর ডাকাত দলের সদস্যদের চিনে ফেলে এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। এসময় জাহাঙ্গীরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ডাকাতদল।
স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় এবং ভুক্তভোগী আরো ৭/৮ জনকে হাত–পা বাঁধা ও আহত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে তারা জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ এ নিয়ে গেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের প্রতিবেশী ওই রাতে ডাকাতদের কবলে পড়া মো. ফজল আহাম্মদ ড্রাইভার বাদী হয়ে ২০০৩ সালের ২৯ নভেম্বর হাটহাজারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা হওয়ার পর ঐদিন রাতেই উপজেলার ফটিকার মৃত সৈয়দ আহম্মদের ছেলে আসামি দিদারুল আলম প্রকাশ দিদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন জেল হাজতে থাকার পর দিদারুল আলম জামিনে মুক্তি পেয়ে বের হয়। পরবর্তী সময়ে হাজিরা না দেয়ায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আটক এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়।
এদিকে ২০২২ সালের ৩০ মে আদালত আসামি দিদারুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। অন্য একটি ধারায় তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। গ্রেপ্তারের পর আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।