২০০৩ সালে সর্বশেষ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি এডহক কমিটি গঠিত হয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালে ত্রি–বার্ষিক সম্মেলন করার উদ্যোগ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। অবশেষে দীর্ঘ ২০ বছর পর এবার উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আগামীকাল ২৫ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনকে ঘিরে চট্টগ্রাম শহর থেকে উত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যেক উপজেলার রাস্তার–আশপাশেসহ অলিগলি ছেয়ে গেছে সম্মেলনের ব্যানার ও পোস্টারে। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন তা নিয়ে কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে নানা হিসাব–নিকাশ চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ নিজ নেতার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেকে। উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই ও সন্দ্বীপ উপজেলায় নেতাকর্মীরা পছন্দের প্রার্থীর ছবি দিয়ে তৈরি করেছেন ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে নতুন ও পুরাতন নেতাদের কর্মকীর্তি নিয়ে।
জানা যায়, ২০০৩ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কর্মী সমাবেশের মাধ্যমে ওই সম্মেলনের পূর্বে শওকতুল আলমকে সভাপতি ও বেদারুল আলম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি জেলার সাতটি উপজেলায় কমিটি গঠন পূর্বক সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। এরপর ২০১৩ সালে সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো। এজন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হলেও সম্মেলন হয়নি। এবার সম্মেলন সফল করতে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি এবং ৯টি উপ–কমিটি করা হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি সূত্রে জানা যায়, সভাপতি পদে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মীরসরাইয়ের মো. এরাদুল হক নিজামী ভুট্ট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রাঙ্গুনিয়া থেকে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও উত্তর জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মো. নাছির উদ্দিন রিয়াজ এবং উপজেলা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ রণি। এছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪ জন করে ২৮ জন এবং সহ সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে অন্তত আরও ১২০ জন প্রার্থী নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি বরাবর জমা দিয়েছেন।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মীরসরাইয়ের মো. এরাদুল হক নিজামী ভুট্ট বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনকে ঘিরে উত্তর চট্টলার প্রত্যেক উপজেলার তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি এই সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষ ও অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসবক লীগ নেতৃত্বের সৃষ্টি হবে। যারা জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিতে লীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নাছির উদ্দিন রিয়াজ বলেন, ‘অন্তত ১৫০ জনের অধিক সাবেক পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে প্রার্থী হয়েছেন। আমি নিজেও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছি। দায়িত্ব পেলে রাঙ্গুনিয়ার ন্যায় উত্তর চট্টলাতেও স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সারাদেশের একটি মডেল সংগঠনে পরিণত করতে কাজ করে যাবো ইনশা আল্লাহ।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাঈদ মোহাম্মদ রণি বলেন, ‘উত্তর চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সুসংগঠিত করতে প্রার্থী হয়েছি। দায়িত্ব পেলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাবো।’