সাড়ে ৪ চার মাস পর গত পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ। প্রথম দুই মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে সাড়ে ৩ হাজার টনের অধিক মাছ শিকার করা হয়েছে। এসব মাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্র। যদিও কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) নানা উদ্যোগের কথা বললেও হ্রদে ছোট প্রজাতির মাছের আধিক্য। গত দুইমাসে অবতরণকৃত মাছের ৯৩ শতাংশই ছোট প্রজাতির।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, হ্রদে মাছের প্রাকৃতিত প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হ্রদে আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন। তবে চলতি বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে কমায় নির্ধারিত সময়ের আগেই আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার তিন মাসেও হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় দুই দফায় আরও এক মাস ১২ দিন নিষেধাজ্ঞার সময় বর্ধিত করা হয়েছিল। তবে এবছর রাঙামাটিতে বন্যার কারণে শেষের দিকে হ্রদের পানিও বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের তথ্য মতে, সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৯০০ টন মাছ অবতরণ করা হয়েছে বিপণনকেন্দ্রের চারটি কেন্দ্রে। ১ হাজার ৯০০ টন মাছের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অক্টোবর মাসে ১ হাজার ৭৫০ টন মাছ অবতরণের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার অধিক।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের রাঙামাটি শহরের প্রধান বিপণনকেন্দ্র ছাড়াও জেলার কাপ্তাই, মারিশ্যা ও খাগড়াছড়ির মহালছড়িসহ তিনটি উপকেন্দ্র রয়েছে। এসব বিপণনকেন্দ্রের পল্টুনে অবতরণ করা মাছের মধ্যে বেশির ভাগই কেচকি, চাপিলাসহ অন্যান্য ছোট প্রজাতির মাছ। গত সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে অবতরণ করা মাছের ৯৩ শতাংশ ছোট প্রজাতির মাছ। বাকী ৭ শতাংশ পাওয়া যাচ্ছে কার্প জাতীয়সহ অন্যান্য বড় প্রজাতির মাছ। তবে বিপণনকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দাবি, অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি আহরণ মৌসুমে বড় প্রজাতির মাছ বেড়েছে। অন্যান্য মৌসুমে ৪–৫ শতাংশ বড় মাছ পাওয়া গেলেও এবার ৭ শতাংশ বড় প্রজাতির মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, গত রোববার পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণের ৬৬তম দিনে ৩ হাজার ৯১০ টন মাছ অবতরণ করা হয়েছে। গত বছর একই দিন পর্যন্ত অবতরণ ছিল ৩ হাজার ১৪৭ টন, এই মাছ থেকে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। মাছ অবতরণ বাড়ার কারণে গতবছরের চেয়ে এবার ২৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।