১৮ মাসের শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায় হবিগঞ্জ

দুই নারী সহযোগীসহ এক ব্যক্তি আটক, শিশু উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

মামলায় হাজিরা দিতে এসেও অপরাধ মনোবৃত্তি থেকে বেরুতে পারল না সোহেল। হাজিরা দিয়ে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ এলাকার রাজা মিয়ার কলোনি থেকে ১৮ মাসের এক শিশুকে চুরি করে রাতে হবিগঞ্জ চলে যায় সোহেল ও তার সহযোগী দুই নারী। এ ঘটনায় তিনজনকে হবিগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য। এ সময় অপহৃত শিশু আরজুকেও উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, বিক্রির জন্য শিশুটিকে চুরি করে হবিগঞ্জে আত্মগোপন করেছিল তারা। গত ১৫ এপ্রিল দুপুর আড়াইটার দিকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার খবরা নামক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে বায়েজিদ থানা পুলিশের একটি টিম। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজন হলো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার চিনখা দত্তে গাও মরা ছরির পাড় এলাকার বাসিন্দা সোহেল (২৯) ও তার স্ত্রী পরিচয়ধারী কুলসুম ওরফে কুসুম ওরফে সুমি (২৭) এবং সোহেলের মা খোরশেদা বেগম (৫৫)।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান আজাদীকে জানান, একই থানাধীন রৌফাবাদ রাজা মিয়ার কলোনিতে দুই সন্তানকে নিয়ে বাস করেন গার্মেন্টসকর্মী মুক্তা বেগম ও স্বামী মাংস বিক্রেতা আব্দুল খালেক। নাজমা আকতার নামে তাদের ১২ বছরের এক মেয়ে ও ১৮ মাস বয়সী আরজু নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল আরজুকে নাজমার কাছে রেখে নিত্যদিনের মতো মুক্তা বেগম গার্মেন্টেসে চলে যান। আব্দুল খালেকও মাংস বিক্রির জন্য বাসা থেকে বের হন। এক পর্যায়ে ছোট ভাইকে বাসায় রেখে নাজমা কলোনির বাসা থেকে বাইরে এলে পাশের বাসার কুলসুম কৌশলে আরজুকে চুরি করে নিয়ে যায়। পরে কুলসুম তার কথিত স্বামী সোহেলের সহায়তায় শিশু আরজুকে নিয়ে হবিগঞ্জ চলে যায়। সন্ধ্যায় বাসায় এসে শিশু পুত্র আরজুকে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন মুক্তা বেগম।
ওসি জানান, মুক্তার অভিযোগের পর আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় আরজুকে এক নারী কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে। এ সময় কুলসুমার ছবি শনাক্ত করা গেলেও কেউ তার পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা দিতে পারছিল না। শুধু জানা যায় কয়েক মাস ধরে কুলসুমা রৌফাবাদ এলাকায় বিভিন্ন বাসায় ছিল। একপর্যায়ে কুলসুমার পরিচয় নিশ্চিত করে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
তিনি বলেন, কুলসুমা ও সোহেল নিজেদের স্বামী-স্ত্রী দাবি করলেও কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি। সোহেলের বাড়ি মৌলভীবাজারে হলেও আগে চট্টগ্রাম থাকত। বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে সে হবিগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে যায়। কিন্তু তার মা খোরশেদা আমিন কলোনিতে থাকত।
ওসি জানান, মামলার হাজিরা দেওয়ার জন্য গত ১২ এপ্রিল সোহেল চট্টগ্রামে আসে। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম আদালতে তার মামলার হাজিরা ছিল। ওইদিন কুলসুম রাজা মিয়া কলোনি থেকে শিশুটি চুরি করে আমিন কলোনিতে সোহেলের মায়ের বাসায় চলে যায়। সেখান থেকে তারা বিকালের ট্রেনে হবিগঞ্জের মাধবপুর চলে যায়।
শিশুটিকে কেন চুরি করেছে এ বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে জানিয়ে ওসি কামরুজ্জামান বলেন, যেহেতু একেবারে সীমান্তবর্তী এলাকায় শিশুটিকে নেওয়া হয়েছিল, আমাদের ধারণা ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে চুরি করা হয়েছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদিনে বিপিসির লোকসান ৬০ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধজব্বারের বলী খেলা ১২ বৈশাখ জেলা পরিষদ চত্বরে