১৫ লাখ পরিশোধ, বাকিটা মওকুফ, বাড়ি ফিরছে নুহা-নাবা

| সোমবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

বিশাল অংকের বিলের কারণে হাসপাতালে আটকে থাকা আলাদা হওয়া দুই বোন নুহা ও নাবা অবশেষে বাড়ি ফিরছে। হাসপাতাল বিলের প্রায় ২২ লাখ টাকার মধ্যে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধের পর গতকাল রোববার ছাড়পত্র পেয়েছে তারা। বাকি টাকা মওকুফ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবারই দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা মো. আলমগীর হোসেন রানা। খবর বিডিনিউজের।

মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো কুড়িগ্রামের দুই শিশু নুহানাবার চিকিৎসা বিনামূল্যে করার কথা ছিল। প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের চিকিৎসা হয়, খরচ দিচ্ছিল হাসপাতাল। তবে ছাড়পত্র দেওয়ার আগে শিশু দুটির বাবার হাতে প্রায় ২২ লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল। ফলে তাদের বাড়ি ফেরা নিয়ে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। গতকাল বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগ তাদের ছাড়পত্র দেয়। এতে শিশু দুটির ২ বছর ৭ মাস ২০ হাসপাতালবাস শেষ হলো।

২০২২ সালের ৪ এপ্রিল মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো অবস্থায় এই দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল। নুহানাবার বাবা মো. আলমগীর হোসেন রানা বলেন, সোমবার (আজ) সকালে হাসপাতাল ছাড়বেন তারা। পরবর্তী ফলোআপের জন্য এক মাস পর আবার বিএসএমএমইউতে আসতে হবে তাদের। তিনি বলেন, আমরা আজ হাসপাতালেই আছি। কাল সকালে বাড়ি চলে যাব। এক মাস পর আবার আসতে বলেছে। ভিসি স্যার বলেছেন, সে সময় ভর্তিঅপারেশন সব ফ্রি করে দেবেন।

২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক মো. আলমগীর হোসেন রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে জন্ম নেয় মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাবা। ওই বছরের এপ্রিল মাসে বিএসএমএমইউ এর সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর আরও কয়েক ধাপে অস্ত্রোপচার হয় এই দুই শিশুর। চূড়ান্তভাবে তারা আলাদা হয় এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে গত ৭ নভেম্বর এ দুই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল। তবে ৫ নভেম্বর হাসপাতালের রেন্ট কালেক্টর অফিস শিশু দুটির বাবাকে কেবিন ভাড়া বাবদ ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে নুহানাবার বাবামা। বিএসএমএমইউর বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেননি তারা। বিএসএমএমইউর কোনো দপ্তরই এর দায় নিতে রাজি হচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি এক ব্যক্তির নজরে এলে তিনি ১৫ লাখ টাকার ব্যবস্থা করেন বলে জানান আলমগীর। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখেছেন। তিনি হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে শনিবার ১৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। বাকী টাকা হাসপাতাল মওকুফ করে দিয়ে আজ ছাড়পত্র দিয়েছে।

গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসএমএমইউ জানিয়েছে, নূহা ও নাবার চিকিৎসায় ৫০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। কেবিন ভাড়া, ওষুধ কেনা, অস্ত্রোপচারের ব্যবহৃত সরঞ্জাম, এ্যানেসথেসিয়া সামগ্রী এবং অস্ত্রোপচারের চার্জ। এরমধ্যে ৩৬ লাখ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় বহন করেছে। বাকী টাকা অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষার্থী ধর্ষণে মাদ্রাসা বাবুর্চির যাবজ্জীবন
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালী-সাতকানিয়া সীমান্তে পাহাড়ের ঢালুতে অসংখ্য ইটভাটা