১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আলাদা হল শিশু নুহা ও নাভা

| বুধবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচারে আলাদা হয়েছে মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো দুই শিশু নুহা ও নাভা। সফল অস্ত্রোপচারের পর কুড়িগ্রামের ওই দুই শিশু এখন ভালো আছে; তাদের রাখা হয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে।

নুহানাভার অস্ত্রোপচার চলে গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে ৩৯ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ১০০ জনের দল এতে অংশ নেয়। দুই শিশুকে আলাদা করার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিএসএমএমইউ এর কেবিন ব্লকে তাদের দেখতে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রী নিজেও ওই চিকিৎসক দলের সদস্য। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি আজ তাদের (শিশুদের) দেখলাম। আমার কাছে খুব ভালো লাগল। বাচ্চা দুটি পুরোপুরি আলাদা হয়েছে এবং তারা ভালো আছে। আমার মনে হচ্ছে এটা একটা যুগান্তকারী কাজ। চিকিৎসায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে ভুটানের একজন রোগীকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের অগ্রগতি বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রবণতা আস্তে আস্তে কমবে। খবর বিডিনিউজের।

শিশু দুটির চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি উপাচার্য মহোদয়কে বলেছেন, দুটি শিশুর চিকিৎসার যা খরচ, তিনি বহন করবেন। বাংলাদেশের আনাচেকানাচে অনেক রোগী আছে। আমি অনুরোধ করব আপনারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আমার মনে হয় এ ধরনের রোগের চিকিৎসা করা যাবে। এখন সব কিছুই অ্যাভেইলেবল।

প্রধানমন্ত্রী শিশুদের খোঁজখবর নিচ্ছেন জানিয়ে বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেষ ধাপের অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নুহা ও নাভা ভালো আছে। এখন নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্রে তাদের রাখা হয়েছে।

২০২২ সালের ২১ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলার কাঁঠালবাড়ীর পরিবহন শ্রমিক আলমগীর রানা ও তার স্ত্রী নাসরিনের গর্ভে জন্ম নেয় মেরুদণ্ডে জোড়া লাগানো শিশু নুহা ও নাভা। ওই বছরের এপ্রিল মাসে বিএসএমএমইউ এর সার্জারি অনুষদের ডিন ও নিউরো স্পাইন সার্জন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে দুই শিশুকে ভর্তি করা হয়। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি তাদের প্রথম ধাপের সফল অস্ত্রপচার করা হয়। এরপর তাদের আলাদা করতে সোমবার ১৫ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচার হয়।

অস্ত্রোপচারের আগে থেকে বেশ দুঃশ্চিন্তায় থাকলেও এখন খুশি নুহানাভার মা নাসরিন আক্তার। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে ওটি হবে এজন্য অনেক চিন্তায় ছিলাম। স্যারেরা যখন বললেন, ১৩ ঘণ্টা অজ্ঞান থাকার পর আধা ঘণ্টাও লাগেনি তাদের জ্ঞান ফিরতে, তখন বেশ ভালো লেগেছে। তাদের এত তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরবে, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আল্লাহর কাছে লাখো লাখো শুকরিয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং হাসপাতালের স্যারদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের জার্সি উন্মোচন
পরবর্তী নিবন্ধউখিয়ায় বন বিভাগের অভিযানে অবৈধ কাঠসহ গাড়ি জব্দ