১৫ ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি নালা পরিষ্কারে বিশেষ কর্মসূচি

প্রতি ওয়ার্ডে কাজ করবে ৪০ কর্মী

মোরশেদ তালুকদার | রবিবার , ১৩ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নালা পরিষ্কারে ‘বিশেষ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম’ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ কর্মসূচির আওতায় নগরের জলাবদ্ধতাপ্রবণ পৃথক ১৫ ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি খালনালা পরিষ্কার করা হবে। এতে কাজ করবে ২০০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী। এর মধ্যে ১০০ জন হচ্ছেন চসিকের নিজস্ব শ্রমিক। বাকিদের ভাড়ায় নিয়োগ দেয়া হবে। কাজ তদারকির জন্য পরিচ্ছন্ন বিভাগের ৮ কর্মকর্তার মাঝে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরে ৭৩৮ কিলোমিটার সেকেন্ডারি পাকা নালা রয়েছে। যার গড় প্রস্থ ১ দশমিক ১০ মিটার। চসিকের আওতাভুক্ত এসব সেকেন্ডারি নালা পরিষ্কারে গত চার বছরে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা খরচ করে সংস্থাটি। এর মধ্যে গত অর্থবছরে (২০২২২০২৩) এসব নালা পরিষ্কারে ২ কোটি টাকা খরচ করে চসিক। এর আগে ২০২১২০২২ অর্থ বছরে ৪ কোটি টাকা, ২০২০২০২১ অর্থবছরে ৭ কোটি টাকা এবং ২০১৯২০২০ অর্থবছরে খরচ করে দেড় কোটি টাকা। এছাড়া চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয় পাঁচ কোটি টাকা।

অবশ্য প্রতি বর্ষায় নগরে জলাবদ্ধতার পর অভিযোগ উঠে নিম্নাঞ্চলের সেকেন্ডরি নালানর্দমা পরিষ্কার না থাকায় খালে পানি যেতে পারে না। তাই এলাকাগুলো ডুবে থাকে। এ জন্য আঙ্গুল তোলা হয় চসিকের দিকে। সর্বশেষ অতি বৃষ্টি ও জেয়ারের প্রভাবে চলতি মাসে পাঁচদিন (২ আগস্ট এবং ৪ থেকে ৭ আগস্ট) ভয়াবহ জলাবদ্ধতা হয় নগরে। এসময় শহরের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। পানিবন্দি লোকজনের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি ছিল চরমে। এ জলাবদ্ধতার জন্য চসিকের দায়িত্বশীলরা সিডিএকে দোষারোপ করে। তাদের অভিযোগ ছিল, ‘সিডিএর চলমান মেগা প্রকল্পভুক্ত খাল থেকে মাটি উত্তোলন করেনি। এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।’

তবে সিডিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দাবি করেন, ‘প্রকল্পভুক্ত খাল পরিষ্কার আছে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন ঠিকমতো নালানর্দমাগুলো পরিষ্কার করছে না। এতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে জলাবদ্ধতা বেশি হচ্ছে।’

এ অবস্থায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার সেকেন্ডারি নালা পরিষ্কারের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ওইদিনই আট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরা হচ্ছেন উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবু তাহের ছিদ্দিকি, হাসান রশিদ, প্রণব শর্মা, শেখ হাসান রেজা, কল্লোল দাশ, আলী আকবর এবং ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম আজাদীকে বলেন, প্রথম ধাপে পৃথক পাঁচটি ওয়ার্ডে কাজ করা হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ নালাগুলোতে পরিচ্ছন্ন কাজ শেষ করার চেষ্টা করব। জোন প্রধানরা পরিদর্শন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য নালা চিহ্নিত করবে। বিশেষ এ কর্মসূচির পাশাপাশি নিয়মিত পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমও পরিচালিত হবে। তিনি জানান, দ্বিতীয় ধাপে পাঁচটি এবং তৃতীয় ধাপে আরো পাঁচটি ওয়ার্ডে এ বিশেষ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আজ থেকে কাজ শুরু হতে পারে বলেও জানান তিনি।

আবুল হাশেম বলেন, প্রথম ধাপে ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৫ নম্বর মোহরা, ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর, ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর এবং ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি নালাগুলো পরিষ্কার করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া, ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া, ৩৪ নম্বর পাথরঘাট এবং ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ডে। তৃতীয় ধাপে ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ এবং ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের নালাগুলো পরিষ্কার করা হবে।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী আজাদীকে বলেন, কর্পোরেশনের বিশেষ দল থেকে ১০০ জন এবং ভাড়ায় নেয়া ১০০ জন শ্রমিককে পাঁচ ওয়ার্ডে ভাগ করে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালানো হবে। এক্ষেত্রে প্রতি ওয়ার্ডে কাজ করবে ৪০ জন করে শ্রমিক। এর সঙ্গে ওয়ার্ডের নিয়মিত পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমও পরিচালিত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজার সৈকতে ভয়ংকর বিষধর সাপ ইয়েলো বেলিড
পরবর্তী নিবন্ধসর্বোচ্চ উৎপাদনে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র