চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিশেষ নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বিশেষ নিলামে টাইলস–ফেব্রিক্সসহ ১৪৫ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছে। গত ১৬ জুলাই থেকে অনলাইনে নিলামে পণ্যের প্রস্তাবিত দরপত্র দাখিল শুরু হয়েছে। মূল্য দাখিল করা যাবে আগামী ৬ আগস্ট দুপুর ২ টা পর্যন্ত। অন্যদিকে আগ্রহী বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) ২০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সরাসরি পণ্য দেখতে পারবেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ১৪৫ লট পণ্যের মধ্যে রয়েছে–এমপিইটি ফিল্ম, ব্যবহৃত কোবেলকো এক্সক্যাভেটর, পপলিন ফেব্রিক্স, টাইলস, ওয়াটার ফিল্টারিং মেশিনারি, নিউ টায়ার, অটো এলপিজি স্টোরেজ ট্যাংক, জিপসাম বোর্ড, আর্ট কার্ড ২৩০ জিএসএম, গাড়ির আয়না, এক্রিলিক পলিমার, এলইডি ল্যাম্প, জ্যাকেট, গার্মেন্টস এঙেসরিজ, আর্টিফিসিয়াল টার্ফ, রিচার্জবল ফ্যান, ব্লক মেকিং মেশিন, সোডিয়াম সালফেট, মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন ও এঙেসরিজ, ক্যাপিটাল মেশিনারি, ডিজেল ইঞ্জিন, শ্যাম্পু, লাইমস্টোন, হেলমেট, পেপার, ক্র্যাপ্ট লইনার পেপার, আয়রন ডাস্ট স্ক্র্যাপ, সেকেন্ড হ্যান্ড মেশিনারি, পাইপ ফিটিং, সোলার স্ট্যান্ড ফ্যান, ক্যালসিয়াম অক্সাইড, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, উড প্যাকিং ম্যাটেরিয়ালস, গ্যাস স্টোভ পার্টস, প্লাস্টিক ফিল্ম, হোয়াইট স্প্রিট, টেক্সটাইল কেমিক্যালস, স্টিল স্ক্র্যাপ, সোডিয়াম নাইট্রেট প্রভৃতি।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের বিডারররা বলছেন, কাস্টমসে অনেক পণ্য নিলামে তোলা হয়, দেখা যায়–নিলাম অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে আর বিক্রয় অনুমোদনের খবর থাকে না। এতে বিডারদের পে অর্ডার আটকে থাকে। এছাড়া যথাসময়ে পণ্যের অনুমোদন না হওয়ায় বিডারদেরও ভোগান্তি হয়। তাই বিষয়টি কাস্টমস নিলাম শাখা সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া উচিত।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে আমরা নিলামযোগ্য পণ্য দ্রুত নিলাম করছি। বন্দরের জট নিরসনে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেই ধারাবাহিককতায় এবার বিশেষ নিলামে মাধ্যমে ১৪৫ লট পণ্য বিক্রি করা হবে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।