চট্টগ্রাম বন্দরে কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ৭১ গাড়ির বিক্রয় আদেশ জারি করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ২০ অক্টোবর কাস্টমসের নিলাম শাখার উপকমিশনার সন্তোষ সরেন স্বাক্ষরিত সেই আদেশে বলা হয়েছে, আমদানি নীতি আদেশের প্রযোজ্য শর্ত প্রতিপালন, মামলা আছে কিনা সেই বিষয়ে আইন শাখার মতামত গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট সকল শাখার অনাপত্তি সাপেক্ষে অনুমোদন করা হলো।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ই-অকশন ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ৭৮টি গাড়ির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে দরপত্র জমা পড়ে ৭১টিতে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব গাড়ির সংরক্ষিত বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। কিন্তু বিক্রি হয় মাত্র ১২ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকায়।
জানা গেছে, নিলামে জাপানের তৈরি ১ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৯২৪ টাকার নেভি ব্লু কালারের মিতসুবিশি জিপ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনেছে নগরীর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের মেসার্স এসএস ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মোহরার হাসান আলী নামের একজন বিডার ১ কোটি ২৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭১ টাকার জার্মানির তৈরি মার্সিডিজ বেঞ্জ ৫ লাখ ১২ হাজার টাকায় কিনেছেন। রাজধানীর গুলশানের আহমেদ ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ১ কোটি ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ২১৯ টাকার গাড়ি নিয়েছেন ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকায়।
এদিকে ভাটিয়ারীর এসএস গ্রিন শিপ ব্রেকিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং ১ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৯২৪ টাকা মূল্যের মিতসুবিশি কিনেছে ৬ লাখ টাকায়। বন্দর পোর্ট কলোনি আবাসিক এলাকার সুমালিকা সুফিন ২ কোটি ৭৮ লাখ ৬৪ হাজার ৫৯৩ টাকা মূল্যের জার্মানির তৈরি বিএমডব্লিউ কিনেছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৯০০ টাকায়। নগরীর দেওয়ানহাটের ফারজানা ট্রেডিং ৪ কোটি ৫ লাখ ১৩ লাখ ৩১৩ টাকা মূল্যের ল্যান্ড রোভার কিনেছেন ৩০ লাখ টাকায়। চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী আজাদীকে বলেন, কার্নেট সুবিধার গাড়িগুলো অনেক পুরনো মডেলের। একসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সে পারমিট (সিপি) নেয়ার ঝামেলা ছিল। তবে এখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সিপি নিয়ে নিলামে তোলার কারণে এই জটিলতা নিরসন হয়েছে। নিলামের স্থায়ী আদেশ মতে, তৃতীয়বার নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনূকুলে বিক্রয় আদেশ দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এখানে সংরক্ষিত মূল্য কোনো বিষয় নয়। যেহেতু এই গাড়ির নিলাম আগের দুবারের ধারাবাহিকতায় সম্পন্ন হয়েছে।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, সর্বপ্রথম ২০১৬ সালের আগস্টে ৮৫টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। পরে ২০১৭ সালের মে মাসে ১১৩টি, ২০১৮ সালের মে মাসে ১১১টি গাড়ি এবং ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো ২২টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। কিন্তু প্রতিবারই দামে অসামঞ্জস্য থাকায় দরদাতাদের কাছে গাড়ি বিক্রি করতে পারেনি কাস্টমস।
২০২১ সালের ৩ ও ৪ নভেম্বর ই-অকশন ও ম্যানুয়াল নিলামে ১১২টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। সেই সময় মাত্র ৩টি গাড়ি বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া গত ১২ ও ১৩ জুন অনলাইন ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ১০৮টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। সেই নিলামে ৩৪টি গাড়ির বিক্রির অনুমোদন দেয় কাস্টমস।












