ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে আতঙ্কের দিনে ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন দেখল ঢাকার পুঁজিবাজার, এক দিনেই সূচক কমে গেল পৌনে তিন শতাংশ। গতকাল সোমবার সকালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যখন লেনদেনের শুরু হয়, প্রধান সূচক ডিএসইএক্স তখন ৬ হাজার ৬৩৮ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে ছিল। শুরুতেই সূচক পড়তে থাকে এবং মোটামুটি লেনদেনের পুরোটা সময় সেই প্রবণতা চলে। দিন শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮২ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৪৫৬ দশমিক ৫১ পয়েন্ট হয়। খবর বিডিনিউজের।
শতাংশের হিসাবে ডিএসই সূচকের এই পতন গত ১১ মাস ৩ দিনের মধ্যে বেশি। এর আগে গত বছরের ৪ এপ্রিল ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল ঢাকার প্রধান সূচক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এত বড় পতনের কোনো যৌক্তিক কারণ তিনি ‘খুঁজে পাচ্ছেন না’। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণে বা যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশে যে প্রভাব পড়বে বা পড়তে পারে সেটা ঠেকানোর সক্ষমতা আমাদের বাজারের আছে। সেটা বড় প্রভাব ফেলতে পারার কথা না। আমার মনে হয় বিনিয়োগকারীরা ভয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এই শেয়ার কমে ছেড়ে দিয়ে পরে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
চট্টগ্রাম স্টক অ্যাঙচেঞ্জও এদিন সূচকপতন দেখেছে। এ বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪৫৫ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১৮ হাজার ৯৮৯ দশমিক ১২ পয়েন্ট। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে আগের দিনের তুলনায় ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বেশি। মোট ২০ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে চট্টগ্রামে, যা আগের দিন ১৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ছিল।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধিয়ে দিলে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। রাশিয়ার আগ্রাসনের জবাবে মস্কোর তেল-গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র অবরোধ আরোপের সম্ভাবনার খবরে সোমবার তেলের দাম উঠে যায় ১৩০ ডলারে, যা ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ।
স্বাভাবিকভাবেই তেলের বাজারের ধাক্কা লাগে বিশ্ব পুঁজিবাজারে। এশিয়ার মধ্যে জাপানের নিক্কেই সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ৪ শতাংশ পড়ে যায়। তেলের দাম নিয়ে ওই আতঙ্কই বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে সূচক পতনের বড় কারণ বলে মনে করছেন মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান।