নগরীর ১০টি সরকারি স্কুলে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আগামীকাল। ১৫ ডিসেম্বর সকাল দশটা থেকে স্কুল ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট (http://www.gsa.teletalk.com.bd) -এ গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবে ভর্তিচ্ছুরা। আগামী ২৭ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে সরকারি স্কুলগুলোর ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে এবার লটারির মাধ্যমেই ভর্তির সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। আবেদন গ্রহণ শেষে একযোগে লটারি অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর। অনলাইনে লটারির মাধ্যমেই ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।
আবেদন ফি : করোনা পরিস্থিতির কারণে আবেদন ফি কমিয়ে ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবার। আগে এ ফি ১৭০ টাকা ছিল। কেবল টেলিটিক প্রি-পেইড মোবাইল থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে অনলাইনে এ ফি দেয়া যাবে।
সর্বোচ্চ আবেদন : মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী এবার একজন শিক্ষার্র্থী সর্বোচ্চ ৫টি স্কুলে আবেদন করার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ স ম জামসেদ খোন্দকার।
প্রসঙ্গত, সামপ্রতিক বছরগুলোতে নগরীর স্কুলগুলোকে তিনটি ক্লাস্টারে ভাগ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হতো। একটি ক্লাস্টারে একটি করে স্কুল পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে হতো শিক্ষার্থীদের। সে হিসেবে তিনটি ক্লাস্টারে সর্বোচ্চ তিনটি স্কুলে আবেদনের সুযোগ ছিল ভর্তিচ্ছুদের।
এদিকে, সোমবার (আজ) বিকেলে ভর্তি সংক্রান্ত একটি প্রস্তুতিমূলক সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ স ম জামসেদ খোন্দকার। সভায় আলোচনার ভিত্তিতে ভর্তি সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
আসন সংখ্যা : এতদিন মহানগরে সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৯টি থাকলেও এ বছর থেকে চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজও এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে। সে সুবাদে নগরীতে সরকারি স্কুলের সংখ্যা এখন দশটি। দশটি সরকারি স্কুলে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে মোট ৩ হাজার ৯১০টি শূন্য আসনের বিপরীতে এবার ভাগ্যের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণিতে ২ হাজার, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৭৬৫, ৭ম শ্রেণিতে ২০, অষ্টমে ১৭০ এবং নবম শ্রেণিতে ৯৫৫ জন শিক্ষার্থী এবার ভর্তির সুযোগ পাবে। জেলাপ্রশাসন সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
স্কুলগুলোর শ্রেণিভিত্তিক আসনের তথ্য : জেলাপ্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী- স্কুলগুলোর মধ্যে কলেজিয়েট স্কুলে পঞ্চম, ৮ম ও নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এই তিন শ্রেণিতে আসন সংখ্যা যথাক্রমে ৩২০, ১০ ও ১৬০টি। ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কেবল পঞ্চম ও ৯ম শ্রেণিতে ছাত্রী ভর্তি করা হবে। স্কুলটির ৫ম শ্রেণিতে ৩২০ জন এবং ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ১৬০ জন ভর্তির সুযোগ পাবে। সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১৬০ জন করে এবং নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ১৬০ জন ছাত্র ভর্তি করা হবে।
নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম (১৬০), ষষ্ঠ (১৬০), অষ্টম (৪০) ও নবম শ্রেণিতে (বিজ্ঞান) ১৬০টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কেবল পঞ্চম শ্রেণির ৩২০ আসনে ছাত্র ভর্তি করা হবে। চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম (১৬০), ষষ্ঠ (১৬০) ও নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে মোট ১৬০ (বালক ৮০, বালিকা ৮০), ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে মোট ১৪০ (বালক ৭০, বালিকা ৭০), অষ্টম শ্রেণিতে মোট ৬০ (বালক ৩০, বালিকা ৩০) এবং নবম শ্রেণিতে মোট ১৪০ জন (বালক-৭০, বালিকা ৭০) শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। স্কুলটির নবম শ্রেণির ১৪০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় মোট ৬০ জন (বালক- ৩০ ও বালিকা ৩০) এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৮০ (বালক ৪০ ও বালিকা ৪০) জন ভর্তির সুযোগ পাবে। সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চমে ২৪০, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬০, ৮ম শ্রেণিতে ৬০ এবং নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় ৮০ জন ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাবে। হাজী মুহাম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম (১৬০), ষষ্ঠ (২০), ৭ম (২০) ও নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখায় (২০) জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এবার নতুন যুক্ত হওয়া চট্টগ্রাম সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৬৫ জন এবং নবম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়- স্কুলের সংখ্যা একটি বাড়লেও গতবারের তুলনায় শূন্য আসনের সংখ্যা বরং কমেছে এবার। গতবছর ৯টি স্কুলের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ৪ হাজার ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়। এবার স্কুলের সংখ্যা বেড়ে দশটি হলেও গতবারের তুলনায় কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে এসব স্কুলে।