সিএমএসএমই উদ্যোক্তা এবং শিল্প, স্বাস্থ্য, নির্মাণ, পরিবহন, আইসিটি ও কাঁচামালসহ ১০ শ্রেণির পণ্য আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বা ঋণপত্র খুলতে নগদ মার্জিনের হার আগের মতো ব্যাংক ও গ্রাহক সম্পর্কের উপর ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে এসব খাতের উপর মার্জিন সীমা তুলে নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত এল। ডলার সংকটের প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালের জুলাইয়ে ঋণপত্র খুলতে ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিনের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিপত্রে বলা হয়, কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প/ব্যবসা (সিএমএসএমই) খাতের বাণিজ্যিক আমদানিকারক কর্তৃক আমদানিকৃত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ পণ্য সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসা প্রসারের জন্য অত্যাবশ্যকীয়, যা অর্থনৈতিক গতিপ্রবাহ বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সে বিবেচনায় সিএমএসএমই ও অন্যান্য খাতের বাণিজ্যিক আমদানিকারক কর্তৃক আমদানিকৃত নিম্নোক্ত পণ্যসমূহের ক্ষেত্রে ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনে নগদ মার্জিন সংরক্ষণের হার নির্ধারণ করা যাবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
যেসব খাতের জন্য এ সুবিধা : শিল্প সংশ্লিষ্ট মেশিনারিজের খুচরা যন্ত্রাংশ। টেঙটাইলের কাঁচামাল, রাসায়নিক ও আনুষঙ্গিক পণ্য। প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং আইটেম ও এর কাঁচামাল। চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম, আনুষঙ্গিক ও রিএজেন্ট। ইউপিএস/আইপিএস এর যন্ত্রাংশ ও আনুষঙ্গিক পণ্য। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট পণ্য। নির্মাণ সংশ্লিষ্ট স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত পণ্যের সম্পূরক হার্ডওয়্যার পণ্য, স্টিল শিট, এইচ–বিম ইত্যাদি। কম্পিউটার/ল্যাপটপ ও এর যন্ত্রাংশ। তথ্য–যোগাযোগ প্রযুক্তি, ইন্টারনেট, সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট হার্ডওয়্যার পণ্য। যানবাহনের খুচরা যন্ত্রাংশ, টায়ার, টিউব ও এতদসংক্রান্ত অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য।
ডলার সাশ্রয়ের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি করে গত বছরের মাঝামাঝিতে। তার অংশ হিসেবে বিলাস পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে নগদ মার্জিন বাড়িয়ে শতভাগ করা হয়। আবশ্যকীয় ও বিলাস পণ্য ছাড়া অন্যান্য সব পণ্যের আমদানি ঋণপত্র খুলতে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়। তবে শিশুখাদ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ আরও কিছু পণ্য আমদানিকে এর বাইরে রাখা হয়। কিন্ত ওই তালিকায় নিরাপত্তা সামগ্রী, কম্পিউটার, যানবাহনের বিভিন্ন পণ্য (টায়ার, টিউব, ব্রেক ইত্যাদি), আইসিটি ও নিমার্ণ খাত ছিল না। ফলে এসব খাতের পণ্য আামদানিতে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ মার্জিন রাখা শুরু করে ব্যাংকগুলো। পরিপত্রে স্পষ্টতা না থাকায় স্বাস্থ্য খাতের সরঞ্জামে, বিশেষ করে রক্ত পরীক্ষার রি–এজেন্টেও ৭৫ শতাংশ মার্জিন রাখছিল ব্যাংকগুলো। এতে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়।