১০ বেডের আউট ডোর থেকে ৮০০ বেডের পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল

মা ও শিশু হাসপাতাল : ৪৩ বছরের বর্ণিল যাত্রা নানা অর্জন জানাতে লাইফ মেম্বারদের মিলনমেলা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৯ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ

জনগণের টাকায় জনগণের হাসপাতালের অর্জন জনগণকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দশ হাজারেরও বেশি লাইফ মেম্বারের অনুদানে গড়ে উঠা দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি এই হাসপাতালের ৪৩ বছরের পথচলার নানা অর্জন লাইফ মেম্বারদের জানানোর জন্য প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হচ্ছে লাইফ মেম্বার মিলন মেলা। আগামী ১১ মার্চ নগরীর নেভি কনভেনশন সেন্টারে লাইফ মেম্বারদের মিলন মেলা বসছে। ইতোমধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি লাইফ মেম্বার এই মিলনমেলায় যোগ দিতে রেজিস্ট্রেশন করেছে। মিলন মেলার জন্য দু’জন লাইফ মেম্বারের দেয়া ১০ লাখ টাকায় করা হবে র‌্যাফল ড্র। আবার এই র‌্যাফল ড্র’র টিকেট বিক্রি করে অর্জিত হবে অন্তত ১৫ লাখ টাকা। যে টাকার পুরোটাই দেয়া হবে ক্যান্সার হাসপাতালে। সবকিছু মিলে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের লাইফ মেম্বারদের মিলন মেলাকে ঘিরে সাজ সাজ রব শুরু হয়েছে।

নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। ছোট্ট একটি রুমে আউট ডোর চিকিৎসার সুবিধা নিয়ে শুরু হয়েছিল এই যাত্রা। প্রথম দিনে রোগী ছিল ২/৩ জন। পরবর্তীতে যা ১০ জনে উন্নীত হয়েছিল। মাত্র জনা দশেক মা ও শিশুর চিকিৎসা সুবিধা নিয়ে শুরু হওয়া হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন আউট ডোর চিকিৎসা নেন দুই হাজার থেকে বাইশ শত রোগী। হাসপাতালে ভর্তি থাকেন আট শতাধিক। ৮০০ বেডের এই হাসপাতালের সাথে অচিরেই যুক্ত হচ্ছে ১৫০ বেডের ক্যান্সার হাসপাতাল। মাত্র জনাকয়েক লাইফ মেম্বার দিয়ে শুরু হওয়া আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে বর্তমানে লাইফ মেম্বারের সংখ্যা ১০ হাজারের কাছাকাছি। ডোনার মেম্বার রয়েছেন ৪শ’ জন। এই ১০৪০০ জন মানুষের দানঅনুদানেই গড়ে উঠেছে জনগণের হাসপাতাল খ্যাত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। জনগণের টাকায় পরিচালিত জনগণের এই হাসপাতাল দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি একটি হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বহুদিন ধরে। শুধু চট্টগ্রামেরই নয়, দেশের বহু মানুষেরই আস্থা ও ভরসার স্থান হয়ে উঠেছে এই হাসপাতাল। বিশেষ করে করোনাকালে মা ও শিশু হাসপাতালের ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

গত ৪৩ বছর ধরে লাইফ মেম্বারদের দান অনুদানে হাসপাতালটি পরিচালিত হলেও এর অর্জন, সাফল্য এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কোনদিন লাইফ মেম্বারদের সাথে কোন বৈঠক বা আলোচনা হয়নি। এবারই প্রথম লাইফ মেম্বারদের সাথে বৈঠক করে হাসপাতালের অর্জন জানানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতের পরিকল্পনা শেয়ার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের লাইফ মেম্বারের একটি মিলন মেলার মাধ্যমে তাদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করার এই উদ্যোগ নেয়া হয়। ইতোমধ্যে হাসপাতালের আড়াই হাজার লাইফ মেম্বার জনপ্রতি ৫শ’ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে অনুষ্ঠানে যোগদান করবে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫শ’ টাকা নেয়া হলেও সদস্যদের বিপুল পরিমাণ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে ৮০ লাখ টাকার মতো ব্যয় হবে। হাসপাতাল থেকে নেয়া হচ্ছে না এক টাকাও। অনুষ্ঠানের দিন র‌্যাফল ড্রর টিকেট বিক্রি করে অন্তত ১৫ লাখ টাকা আয় করা হবে। যা পুরোপুরি ক্যান্সার হাসপাতালের তহবিলে প্রদান করা হবে।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আজাদ বলেন, জনগণের এই হাসপাতালটি মূলত লাইফ মেম্বারদের দ্বারাই পরিচালিত হয়। কিন্তু অনেক লাইফ মেম্বারই এই হাসপাতালের বিভিন্ন অর্জন সম্পর্কে জানেন না। আমরা সবাইকে নিয়ে সব তথ্য শেয়ার করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা জনগণের এই হাসপাতালের মালিক যে লাইফ মেম্বাররা তা তাদের জানাতে চাচ্ছি। আগামী ১১ মার্চ বিকেল ৪টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আমাদের মিলন মেলা চলবে। এতে আমরা লাইফ মেম্বারদের সবকিছু জানাবো। তিনি বলেন, আমরা ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য কিছু ফান্ডও যোগাড় করতে পারবো। তিনি উদ্যোগটি সফল করার জন্য মা ও শিশু হাসপাতালের সকল লাইফ মেম্বারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে পাঁচ মিয়ানমার নাগরিকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে কোনো নির্বাচন বিতর্কিত হতে দেব না : জেলা প্রশাসক