শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি–বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। গতকাল রোববার সকালে নগরের জামালখান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেয় বিটিএ চট্টগ্রাম শাখা। কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষিত এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান গনী। সাধারণ সম্পাদক শিমুল কান্তি মহাজনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি রণজিৎ কুমার নাথ, আঞ্চলিক শাখার কামাল উদ্দিন, খোকন চক্রবর্তী, আলতাজ মিয়া, শহীদুল ইসলাম, শ্যামল দে, মেজবাহ উদদীন, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি নুরুল হক ছিদ্দিকী, দক্ষিণ জেলা সভাপতি তাপস চক্রবর্তী, উত্তর জেলার সভাপতি ফিরোজ চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ শেখর দত্ত, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. জাকের হোসেন, উপজেলা ও থানা শাখার শাহ আলম, এ কে এম মহিউদ্দিন রাসেল, রফিকুল ইসলাম, আবু সালেক, শফিউল আলম, আবু তৈয়ব, কাঞ্চন বিশ্বাস, আবু বক্কর প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে আন্দরকিল্লা চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে শিক্ষক নেতারা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন। এসময় নেতারা বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক–কর্মচারী দ্বারা। তারা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক–কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রারম্ভিক বেতনে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিতদের বদলির ব্যবস্থা না থাকা এবং দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ইএফটির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেতন প্রদান করা হলেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের গাফিলতির কারণে অনেক এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারী গত ডিসেম্বর থেকে ৪ মাস যাবৎ বেতন ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
শিক্ষক নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বেসরকারি শিক্ষক–কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। টাকা পাওয়ার পূর্বেই অর্থাভাবে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। বিগত সরকার কোনও প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবৈধভাবে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক–কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে রেখেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ আসন্ন ঈদের পূর্বেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং ইএফটি সমস্যার দ্রুত সমাধানসহ ১০ দফা দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ঈদুল ফিতরের পর সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন বলে জানান শিক্ষকরা।