হুমকি-ধমকিতে কাজ হবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এই আন্দোলনে ‘বিজয়’ ছাড়া মানুষ ঘরে ফিরবে না। তার ভাষায়, হুমকি দেয় যে, খেলাফতে মজলিশের মতো অবস্থা হবে, হেফাজতের মতো অবস্থা হবে। হুমকি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী যে, আমরা যদি কোথাও আন্দোলন করতে যাই তাহলে হেফাজতের মতো অবস্থা হবে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এবার মানুষ জেগে উঠেছে, এবার ওইসব হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এই মানুষ এই যে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে, আর ঘরে ফিরবে না।
গতকাল বিকালে সিলেট নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে দলের বিভাগীয় সমাবেশে সরকারের ‘হুমকির’ জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই। সেই লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের হারিয়ে যাওয়া অধিকারকে আমরা ফিরিয়ে নেব, আমাদের ভোটের অধিকারকে আমরা ফিরিয়ে নেবে। আমরা আমাদের সরকার আমরা তৈরি করতে চাই, জনগণ তৈরি করতে চায়। খবর বিডিনিউজের।
আন্দোলন আরও বেগবান করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে লড়াই শুরু হয়েছে এই লড়াইকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই লড়াইকে আরও শক্তিশালী, আরও বেগবান করতে হবে। এই সিলেট অঞ্চল শুধু নয়, সারা বাংলাদেশে এই যে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে, গ্রেপ্তার করছে এবং নির্যাতন করছে তা বন্ধ করতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর যদি একটা মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়, মানুষ তা রুখে দাঁড়াবে। আর যদি একটা হত্যা করা হয়… ভোলাতে আমাদের আব্দুর রহিম, নুরে আলম, নারায়ণঞ্জের শাওন, মুন্সীগঞ্জের শহীদুল ইসলাম শাওন, যশোরের আবদুল আলিম-তাদেরকে এই সরকারের পুলিশ হত্যা করেছে। তারা মনে করেছে, আগের মতো হত্যা করলে, গুলি করলে, নির্যাতন করলে থেমে থাকবে, সব কিছু থেমে যাবে। থামিয়ে রাখতে পারে নাই। আরও সবাই উজ্জীবিত হয়েছে, অনুপ্রাণিত হয়েছে, একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ আরও বেশি করে সফল হচ্ছে।
দফা এক, সরকারের পদত্যাগ : মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলছি, দফা এক, দাবি এক; এই সরকারের পদত্যাগ। দফা এক, দাবি এক; হাসিনার পদত্যাগ। আর ফয়সাল হবে কোথায়, রাজপথে। এটা কে ডাক দিয়েছেন, তারেক রহমান। আরো একটা ডাক দিয়েছেন সেটা হচ্ছে, টেক ব্যাক বাংলাদেশ।
অবিলম্বে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতের ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, জারি-ঝুরি থাকবে না। ওখানে পুলিশ দিয়ে, আমরা দিয়ে, গোয়েন্দা দিয়ে তুমি সবকিছু পাল্টায়ে দিবা, ইভিএম করবা-এটা হবে না। জনগণ তার ভোট এবার দেখে নেবে, কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নেবে।
যারা নির্বাচনে যাবে, তারা গণশত্রু : মির্জা ফখরুল বলেন, খুব লম্বা লম্বা কথা বলে। বলে যে, সংবিধান অনুযায়ী নাকি নির্বাচন হবে। আর কোন সংবিধান? যে সংবিধান তুমি দশবার কাটাছেঁড়া করেছ, যে সংবিধান তুমি নিজে নিজে তৈরি করেছ। বিচার বিভাগকে পকেটস্থ করে সেই আপনার পেটোয়া বিচারককে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। সেই সংবিধান আমরা মানি? মানি না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ফের মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের খুব পরিষ্কার কথা। যে বিধান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছিলেন যে, নির্বাচন হবে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না; যারা বিরোধিতা করবে, তারা গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবে, তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে গণশত্রু হিসেবে।