২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর হেফাজতে ইসলামের নেতা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে আজিজুল হক ইসলামাবাদী গতকাল এ অভিযোগ দায়ের করেন। মামুনুল হক বলেন, আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি। এখন প্রসিকিউশন তথ্য সংগ্রহ করে মামলা করবেন। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত আছে। খবর বাসসের।
এর আগে মুফতি হারুন ইজহারের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নির্মূল কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার, একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের, এবিনিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাস সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এবং এনএসআইয়ের মো. মনজুর আহমেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে প্রায় ১৬ বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সমাবেশ ডাকে হেফাজত। কয়েক দফা দাবিতে তাদের সমাবেশ শাপলা চত্বরে চলছিল। ওইদিন রাতে তাদেরকে সমাবেশ থেকে বিতাড়নে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক শক্তি প্রদর্শন করে। ওই সমাবেশে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার প্রকাশিত প্রতিবেদনে সমাবেশে ৬১ জনের মৃত্যুর পরিচয় প্রকাশ করা হয়। গত ১৯ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অধিকারের পেজে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৃথক অভিযোগ দাখিল করা হলো।