জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এই পূর্ণাঙ্গ রায়ের ভিত্তিতে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা। খবর বাসস ও বিবিসি বাংলার।
এর আগে, গত ১৭ই নভেম্বর ওই মামলার রায় ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর সাত দিন পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হলো। ওই মামলায় রাজসাক্ষী হন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খানের নামে দেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর ঘোষিত ঐতিহাসিক রায়ের পূর্ণাঙ্গ (কপি) অনুলিপি হাতে পেয়েছেন বলে গতকাল গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ নভেম্বর ঘোষিত রায়ে দণ্ডের পাশাপাশি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। সেই সাথে শহীদদের পরিবারকে এবং আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক এই রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, হাত, পা, নাক, চোখ, মাথার খুলি হারানো যেসব সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁদের বাস্তব অবস্থা দেখলে যেকোনো মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক মানসিক অবস্থা ধরে রাখা কঠিন। ফলে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের যেকোনো মূল্যে বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। এক্ষেত্রে ন্যায়বিচারকে ব্যাহত হতে দেওয়ার সুযোগ নেই।
মানবতাবিরোধী অপরাধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে শেখ হাসিনাকে সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল–১ বলেন, সংঘটিত অপরাধে প্ররোচনা ও উসকানি দেওয়া, আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ এবং সংঘটিত অপরাধ প্রতিরোধে নিষ্ক্রিয়তা ও অপরাধ সংঘটনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়ী। এসব অপরাধে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি করেন। এছাড়া শুনানিতে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।












