হাশেম-বাবু দুজনেরই লক্ষ্য হকিটাকে স্কুল থেকে শুরু করা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৬ জুলাই, ২০২৪ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

একটা সময় ছিল যখন চট্টগ্রামের হকি ছিল বেশ জমজমাট। কিন্তু গত এক দশক ধরে চট্টগ্রামের হকি ক্রমশই পিছিয়েছে। হয়তো ‘করার জন্য করা’ হিসেবে একটি লিগের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে ছিলনা কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতা। কোনমতে সেরে ফেলা যাকে বলা হয়। সেটাই হয়েছে। তবে এবারে যেহেতু নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সেহেতু নতুন করেই সবকিছু শুরু করতে হবে সাইফুল আলম বাবুকে। অবশ্য তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে পেয়েছেন অভিজ্ঞ এবং প্রবীন ক্রীড়া সংগঠক বীল মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে। যিনি দীর্ঘ দিন ধরে হকির সাথে জড়িত। আবুল হাশেম এবং সাইফুল আলম বাবুকে ঘিরে হকিতে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে চট্টগ্রাম। আবুল হাশেম দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনে নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর বাবু নিজে একজন হকি খেলোয়াড় ছিলেন। তাই তাদের রসায়নটা মিলবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

কমিটির চেয়ারম্যান আবুল হাশেম জানিয়েছেন আসলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে দায়িত্ব পালন করার মত একটা জায়গাতো নেই। কোথায় বসে কাজ করা হবে সেটাওতো জানিনা। হকির একটা কক্ষ রয়েছে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার মত অবস্থা নেই। তাই প্রথমে বসার ঘরটা খুব জরুরি। তারপর নানা পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে হবে । তিনি বলেন আমরা যে লিগ গুলো করি আমাদেরকে সেখান থেকে সরে আসতে হবে। আমাদেরকে আগে খেলোয়াড় কিভাবে সৃষ্টি করা যায় সেটা চিন্তা করতে হবে। শুধু নামকাওয়াস্তে একটা লিগ করলাম তাতে কোন লাভ হবেনা। তাই আমাদেরকে নিচের দিকে নজর দিতে হবে। যদিও আমরা সব সময় বলি কোচিং করাব, ক্যাম্প করাব, প্রশিক্ষন দেওয়াব। আসলে সে সব আর করা হয়না। তাই চিন্তা করতে হবে আগে আমরা কি করব। তাছাড়া একটা মাঠে আমাদের সব করতে হয়। হকির জন্য মাঠ কতদিন পাব সেটাও একটা বিষয়। আসলে হকিতে এগুতে হলে আমাদের ধারনার মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। কমিটির সম্পাদক সাইফুল আলম বাবুও সভাপতির সাথে সুর মিলিয়েই কথা বললেন। তিনিও চান আগে নিচের দিকে নজর দিতে। বিশেষ করে স্কুল হকি চালু করতে পারলে খেলোয়াড় যাওয়া যাবে। আমাদের যুব হকি খেলতে হয়। সামনেও হয়তো খেলতে হবে। তাই আমি চাই আমরা যেন প্রস্তুতি নিয়ে সেখানে খেলতে যেতে পারি। বছরের শুরুতে আমাকে পরিকল্পনা করতে হবে। আমি স্থানীয়ভাবে কি করব আর জাতীয়ভাবে আমাকে কি কি খেলতে হবে। আর সে হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল লিগ, স্কুল টুর্নামেন্ট, ইয়থ টুর্নামেন্টের উপরই আমাদের জোর দিতে হবে। আর প্রশিক্ষণেরতো বিকল্প নেই। খেলোয়াড়রা যাতে বছরে বেশিরভাগ সময় অনুশীলনে থাকতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের। খেলোয়াড়রা যখণ প্রশিক্ষণে থাকবে তখন আমাদের দল গঠনে সমস্যা হবেনা। চট্টগ্রামে অনেকেই হকি প্রশিক্ষণের সাথে জড়িত। আমরা তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে পারলে আগামী চার বছরে খেলোয়াড় বের করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন আমাদেরকে এখন খেলোয়াড় সৃষ্টির সাথে সাথে আম্পায়ারও সৃষ্টি করতে হবে। আগে যারা আমাদের এখানে আম্পায়ারিং করতেন তাদের অনেকে বয়স্ক হয়ে গেছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে গেছেন। তাই আমাদেরকে সত্যিকারের বিচারক তৈরি করতে হবে। তাদের জণ্য কোর্স করতে হবে। নাহয় আমাদেরকে বারবার ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এই মুহূর্তে হকির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাঠ। কোন মাঠে খেলব আমরা। যদিও আমাদের পক্ষে টার্ফ বসানো সম্ভব নয়। অন্তত একটি সমতল মাঠ পেলেও আমাদের চলবে। কিন্তু সেটাতো নিশ্চিত করতে হবে। তবে আশার কথা হচ্ছে আউটার স্টেডিয়াম আবার প্রস্তুত হচ্ছে। সেখানে আমরা খেলতে পারব। তবে আমাদের সে সুযোগ দিতে হবে। আশা করছি সবাইকে নিয়ে বসে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে আগামী চার বছরে হকিটাকে এগিয়ে নিতে পারব। এই কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে পাঁচজনকে। তারা হলেন মকসুদুর রহমান বুলবুল, লুৎফুল করিম সোহেল, এড. জিয়া উদ্দিন, মোঃ মহসিন, এস এম ইকবাল মোরশেদ। তিনজন যুগ্ম সম্পাদক হলেন আলি হাসান রাজু, সাইফুল্লাহ চৌধুরী, নুরুজ্জামান। সদস্যরা হলেণ আসাদুজ্জামান খান, নিজাম উদ্দিন নিজু, তরুন কান্তি ভট্টচার্য, শাহ পরান নিশান, আরমান হোসেন, আনিসুর রশিদ, মাসুদুল ইসলাম, মাইনুদ্দিন শাকিল, আবদুল মোমেন বাবু, মোঃ হাসান এবং গিয়াসউদ্দিন বাবর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার ডিভিশন ফুটবলে শক্তিশালী দল গঠনের ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধদুই পেনাল্টি রুখে আর্জেন্টিনাকে সেমিতে নিল মার্তিনেস