হালদার ভৌত ও রাসায়নিক মান ঠিক আছে

১৩ পয়েন্টের পানির নমুনা পরীক্ষা

হাটহাজারী প্রতিনিধি | রবিবার , ১ মে, ২০২২ at ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

দেশে কার্পজাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর ১৩ পয়েন্টের পানির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। হালদা নিয়ে গবেষণাকারী চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শফিকুল ইসলাম পানির এই নমুনা পরীক্ষা করেন। এখন পর্যন্ত ভৌত ও রাসায়নিক মানসমূহ আদর্শ মানের মধ্যে রয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি নদীর নাজিরহাট, পেস্কারহাট, নাঙ্গলমোড়া, সাত্তারঘাট, অঙ্গুরীঘোনা, কান্তরআলীহাট, নোয়াহাট, শিপাহীরঘাট, আজিমারঘাট/ মাছুয়াঘোনা, নাপিতেরঘাট, আমতুয়া, রামদাস মুন্সিরহাট ও মদুনাঘাট স্থানের পানির পানির নমুনা সংগ্রহ করে নিজস্ব ল্যাবে ১৬টি প্যারামিটারের বর্তমান মান বের করেন। গত শুক্রবার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি পয়েন্টের প্যারামিটারের মান আলাদাভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল তিনি হালদার ৫টি পয়েন্টের পানির বিভিন্ন প্যারামিটারের মান যাচাই করেছিলেন।

ফলাফলে দেখা যায়, বর্তমানে বায়ুর তাপমাত্র রয়েছে ৩৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রয়েছে। এছাড়া পানির তাপমাত্রা রয়েছে ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যার আদর্শ মান ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পানির স্বচ্ছতা ৩২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার, যার আদর্শমান ১৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার। তড়িৎ পরিবাহিতা ১৭১ দশমিক ৮৫ মাইক্রোসিমেন্স/সেন্টিমিটার, যার আদর্শ মান ৩৫০ মাইক্রোসিমেন্স/সেন্টিমিটার। টিডিএস ৮৫ দশমিক ৮৫ পিপিএম রয়েছে, যার আদর্শ মান ১ হাজার পিপিএম। পিএইচ ৭ দশমিক ৮ মাত্রা, যার আদর্শ মান ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫।

দ্রবীভূত অঙিজেনের মাত্রা রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম/লি., যার আদর্শ মান ৫ মিলিলিটার/লি.। কার্বন ডাই অঙাইডের পরিমাণ রয়েছে ৯ দশমিক ১ মিলিগ্রাম/লি., যার আদর্শ মান ৫ থেকে ১০ মিলিগ্রাম/লি.। পানিতে ক্যালসিয়াম রয়েছে ১৫ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম/লি., যার আদর্শমান ৩৬ মিলিগ্রাম/লি। পানির খরতা পাওয়া যায় ৪৫ মিলিগ্রাম/লি., যার আদর্শমান মাত্রা হলো ২০০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম/লি.। পানিতে ক্ষারকত্ব ৩০ দশমিক ১ মিলিগ্রাম /লি. মাত্রায় পাওয়া যায়, যার আদর্শমান হলো ৫০০ মিলিগ্রাম./লি. পর্যন্ত।

সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো, পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার হচ্ছে লবণাক্ততার পরিমাণ, যা হালদা নদীতে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ পিপিটির কম মাত্রায় পাওয়া যায়। এর আদর্শমান হলো শূন্য দশমিক ৫ পিপিটি।

গত শুক্রবার রাতে গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম গনমাধ্যমকে জানান, নদীর আদর্শ মান যাচাইয়ে ১৩টি পয়েন্টের পানির নমুনা গবেষণা করে দেখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভৌত ও রাসায়নিক মানসমূহ আদর্শ মানের মধ্যে রয়েছে। তাপমাত্রা কিছুটি আদর্শ মানের বাইরে গেলেও তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। গবেষণা থেকে বলতে পারি, বর্তমানে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশুটিকে যেভাবে খুঁজে পেল তার পরিবার
পরবর্তী নিবন্ধটিপ ছুরিসহ ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার