হালদার ফটিকছড়ি অংশে অবাধে বালি উত্তোলন হুমকির মুখে মৎস্য প্রজনন

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি | বুধবার , ৯ জুলাই, ২০২৫ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীর ফটিকছড়ি অংশে ড্রেজার মেশিন ও পাওয়ার পাম্প বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে মৎস্য প্রজনন, আর বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। উপজেলা প্রশাসন খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করলেও এসবের তোয়াক্কা করছে না বালু উত্তোলনকারী এসব সিন্ডিকেট। প্রতিনিয়ত নদীর বিভিন্ন অংশে বালু উত্তোলনের ফলে হালদার বড় ক্ষতির আশঙ্ক্ষা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা যায়, উপজেলার অন্তত ১৫২০টি পয়েন্টে রাজনৈতিক নাম বিক্রি ও প্রভাব খাটিয়ে হালদা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বেশ কিছু সিন্ডিকেট। এর মধ্যে নারায়ণহাট ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া, কুলাল পাড়া, ভাঙাপুল, হাঁপানিয়া, নাজিরহাট পৌরসভার নাসির মোহাম্মদ ঘাটের আশেপাশের ৩৪টি পয়েন্ট, সুয়াবিল মালাকার পাড়া ও সমিতিরহাট ইউনিয়নের আরবানিয়া সাওদাগর ব্রিজ এলাকায় একাধিক সিন্ডিকেট অবাধে বালু উত্তোলন করছে।

সরেজমিনে নারায়ণহাট ইউপির মির্জারহাটের অদূরে মাস্টার পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেজার মেশিন, নৌকা এবং একদল শ্রমিক মিলে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। লোকচক্ষুর আড়ালে স্তূপ করে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার ফুট বালু। এসব বালু রাতে ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর এতে করে এ এলাকার সড়কগুলো পুরোপুরি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে এভাবেই অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে হালদা নদীর তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলনের এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে নদীর তীর ভাঙনসহ এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

এদিকে, হালদা থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে মা মাছের প্রজনন ক্ষেত্র যেমন বিনষ্ট হচ্ছে তেমনিভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষাও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান হালদা গবেষকরা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পরিবেশ সচেতন এলাকাবাসী। তারা দ্রুত এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বালু উত্তোলনের তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরবের খেজুর এখন খাগড়াছড়ির পাহাড়ে
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়ি ঢলে বাড়ছে মাতামুহুরী নদীর পানি, বন্যার শঙ্কা