হারে শেষ আফগান রূপকথা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ১১ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকাপে কখনোই কোনো ম্যাচ জেতা হয়নি। এবারের আসরেও তেমন কোনো প্রত্যাশা ছিল না। বিশ্বকাপটা শুরুও করেছিল আফগানিস্তান বাংলাদেশের কাছে হার দিয়ে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে বড় চমক দিল আফগানরা চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। এরপর আরো দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান এবং শ্রীলংকাকে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে হাটতে থাকে। সবশেষ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শেষ চারে থাকার দাবিটা জোরালো করে আফগানিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে রেকর্ড গড়া হলোনা আফগানদের। শেষ চারে যেতে হলে জটিল সমীকরণ পার করতে হতো আফগানিস্তানকে। কারণ আগের দিন শ্রীলংকাকে উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের পথটা কঠিন করে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত হেরেই গেল এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে আফগানিস্তান। যদিও হারলেও প্রোটিয়াদের ঘাম ঝরিয়ে ছেড়েছেন রশিদনবীরা। আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ম্যাচটিও জিতে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি সেরে নিল। অপরদিকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে না পারলেও এবারের বিশ্বকাপটা স্মরণীয় হয়েই থাকবে আফগানিস্তানের জন্য। এটাই যে আফগানিস্তানের সেরা বিশ্বকাপ।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করেন আফগান দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তাদের ৪৯ বলে ৪১ রানের জুটি ভাঙে গুরবাজের বিদায়ে। ২২ বলে ২৫ রান করে ফিরেন তিনি। পরের ওভারেই ১৫ রান করে ফিরেন আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। অধিনায়ক হাসমতউল্লাহও পারেননি দলের দায়িত্ব নিতে। ফিরেছেন ২ রান করে। রহমত শাহ করেন ২৬ রান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালাতে থাকেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। কিন্তু অপরপ্রান্তে একে একে বিদায় নেন ইকরাম, মোহাম্মদ নবি ও রশিদ খান। এরপর ওমরজাইকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন নুর আহমাদ। অষ্টম উইকেটে দুজন মিলে গড়েন গড়েন ৪৪ রানের জুটি। ২৬ রান করা নুর আহমদকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন কোয়েজে। শেষদিকে মুজিব ও নাবিন বিদায় নিলেও টিকে থাকেন ওমরজাই। কিন্তু নিজের শতকটা তুলে নিতে পারেননি তিনি। ৭১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা উমরজাই ১০৭ বলে ৯৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। আর তাতে আফগানিস্তানের স্কোর গিয়ে দাড়ায় ২৪৪ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪৪ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন কোয়েজে। দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিদি ও কেশব মহারাজ।

২৪৫ রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক এবং অধিনায়ক টেম্বা ভাবুমা যোগ করেন ১১ ওভারে ৬৪ রান। ২৩ রান করা ভাবুমাকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন মুজিব। দুই রান পর ফিরেন কুইন্টন ডি ককও। মোহাম্মদ নবীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ৪৭ বলে ৪১ রান করেন এবারের বিশ্বকাপে ঝড় তোলা ডি কক। তৃতীয় উইকেটে ডুসেন এবং মার্করাম মিলে যোগ করেন ৫২ রান। ৩২ বলে ২৫ রান করা মার্করামকে ফেরান রশিদ খান। নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করে হেনরিক ক্লাসেনকে যখন ফেরান রশিদ খান তখণ দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৯ রান। ঝড় তুলতে পারেননি কিলার মিলারও। মোহাম্মদ নবীর হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরেছেন ২৪ রান করে। তবে আর বিপদ হতে দেননি ডুসেন। পেহলেকায়ুকে নিয়ে ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন ডুসেন। ৯৫ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর পেহলেকায়ু অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৩৯ রান করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনা অস্ত্রোপচারে ১২ ঘণ্টায় ১২ নবজাতকের জন্ম
পরবর্তী নিবন্ধব্যানার, ফেস্টুনে সেজেছে দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন