হারিয়ে যাচ্ছে হস্তলিখিত চিঠিপত্র

প্রান্ত দত্ত | রবিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

হস্তলিখিত চিঠি মানে হচ্ছে হাতে লেখা চিঠি। যে পত্রে এমন একজন ব্যক্তি প্রিয়জনের উদ্দেশ্য তার আবেগ, ভালোবাসা, সুখ-দুঃখগুলো নিজ হস্ত লিখনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন চিঠির মধ্যে। আমার ছোটবেলায় বিশেষ করে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ‘হস্তলিখিত চিঠিপত্র’। আমার শৈশবজীবন কেটেছে গ্রামে। যেখানে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি।

ছোটবেলায় থাকতে দেখতাম, ডাকঘরের সরকারি ঢিলেঢালা পোশাক পরা সাইকেল চড়ে একজন লোক এসে বলতো, ‘আপনাদের নামে একটা চিঠি এসেছে’। আমার বাবা তখন শহরে থাকতেন। বাবার ভালো লাগা, খারাপ লাগার মুহূর্তগুলো জানতে পারতাম ওনার হস্তলিখিত চিঠির মাধ্যমে। চিঠিগুলো জমা করে দিয়ে আসতাম ডাকঘরে। ডাকঘরের সামনে পোস্টবক্সে রেখে আসতাম।

আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে মানুষ আজ ঘরে বসে সবকিছু করছে। বর্তমানে ডাকঘরে কেউ আর চিঠি দিতে যায় না। চিঠির মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার মনের ভাব বা তার বক্তব্যগুলোকে কলমের কালির ছোঁয়ায় প্রকাশ করা যেতো। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে ভুলে গেছি আমাদের অনেক পুরোনো ঐতিহ্যগুলোকে।

একটি চিঠিতে শুধু কয়েকটি শব্দ লিখা থাকে না, থাকে অনেকের মায়া জড়ানো প্রতিটা শব্দে ভালোবাসার কথা, থাকে অনেক সুখ-দুঃখ, আশা, স্বপ্নপূরণের কথা। আমরা বাঙালি জাতির সকলের প্রচেষ্টায় বাংলার সাহিত্য ‘হস্তলিখিত চিঠিপত্রের’ প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পারি। কলমের কালির ছোঁয়ায় উজ্জীবিত হবে চিঠিপত্র ও নতুন প্রাণ ফিরে পাবে পোস্টবক্স এবং সেই ঐতিহ্যের পুরোনো ডাকঘর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফ্রঁসোয়া বারোঁ অংল্যার : নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী
পরবর্তী নিবন্ধজীবন হোক সজ্জিত ফুলের মতো