হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে তার পূর্বসূরি ইসমাইল হানিয়ার চেয়ে বেশি উগ্রপন্থী হিসাবে মনে করা হচ্ছে। গত ৩১ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে হানিয়া নিহত হওয়ার পর ৬ আগস্ট ৬১ বছর বয়সী সিনওয়ারকে নতুন নেতা হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা জানায় হামাস। খবর বাংলানিউজের।
ইয়াহিয়া সিনওয়ার কে?
২০১৭ সাল থেকে সিনওয়ার গাজায় হামাসের নেতা হিসেবে পরিচিত। তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হামাসের সুড়ঙ্গে আত্মগোপনে রয়েছেন। হামাসের প্রধান কূটনীতিক ও ইয়াহিয়ার পূর্বসূরি ইসমাইল হানিয়া অধিকাংশ সময়ই কাতারের রাজধানী দোহায় বসবাস করতেন।
সিনওয়ারকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওই হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। ২৫০ জনেরও বেশি ইসরায়েলিকে গাজায় নিয়ে জিম্মি করা হয়। ইসরায়েলের পাল্টা আক্রমণে এ পর্যন্ত (৯ আগস্ট) অন্তত ৩৯ হাজার ৬৯৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তবে ৭ অক্টোবর থেকে সিনওয়ারকে আর দেখা যায়নি। ৭ অক্টোবরের হামলার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যে কজন হামাস নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছিলেন, সিনওয়ার তাদের একজন। গাজায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষা প্রধান ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছিল। ১৯৬২ সালে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন সিনওয়ার। তার পরিবার উপকূলীয় শহর আশকেলন অঞ্চল থেকে খান ইউনিসে গিয়েছিল। খান ইউনিস বর্তমানে ইসরায়েলের অধিকৃত একটি অংশ। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে ইসরায়েলি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম ফিলিস্তিনি বিদ্রোহ ইন্তিফাদার সময় হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড প্রতিষ্ঠায় সিনওয়ার অবদান রেখেছিলেন। প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চান– হামাসের এমন সদস্যদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। নিষ্ঠুরতার জন্য তিনি ‘খান ইউনিসের কসাই’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। পরে দুই ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যার দায়ে সিনওয়ারসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। সিনওয়ার মোট ২৩ বছর ইসরায়েলি কারাগারে কাটান।