পটিয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে হাত ভাঙার চিকিৎসা করতে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালটির চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম ও আবু ছালেকের অবহেলার কারণে মো. মনতাছির রহমান হৃদয় (৬) নামের ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ শিশুটির পরিবারের। এ ঘটনায় শিশুটির মামা মো. খোরশেদ আলম পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন- তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হৃদয় উপজেলার হাইদগাঁও এলাকার প্রবাসী মো. রফিকের পুত্র। ৩ মেয়ে ও এক ছেলের সংসারে একমাত্র ছেলে হৃদয়কে হারিয়ে তার মা-বাবা শোকে এখন পাগল প্রায়।
হৃদয়ের পরিবার সূত্র জানায়- গত ২৫ মে দুপুরে লিচু গাছ থেকে পড়ে হৃদয়ের হাত ভেঙ্গে যায়। তার মা হাছিনা বেগম তাকে দ্রুত পটিয়া সেন্ট্রাল হসপিটালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. আবু ছালেক তাকে দেখে ডান হাতে এঙ-রে করার পরামর্শ দেন। এঙ-রে রিপোর্টটি হসপিটালের অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলামকে দেখালে তিনি হৃদয়ের ডান হাত অপারেশন করার পরামর্শ দেন। এ অপারেশনের জন্য ডা. সাইফুল ইসলাম ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। হৃদয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবিকৃত সব টাকা পরিশোধ করা হয়। ওইদিন বিকেল ৪ টায় ডা. সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে হৃদয়ের অপারেশন শুরু হয়। হৃদয়কে অজ্ঞান করার ইনজেকশন পুশ করার পর সে অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রায় ১ ঘন্টা ২০মিনিট পর অপারেশন রুম থেকে বের হয়ে ডা. সাইফুল ইসলাম রোগীর অবস্থা গুরুতর জানিয়ে তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে এনে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে হৃদয়কে ভর্তি করা হয়।
হৃদয়ের মা হাছিনা বেগমের দাবি, সেন্ট্রাল হসপিটালে অপারেশনের রুমেই হৃদয়ের মৃত্যু হয়। ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিষয়টি গোপন করেন। পরে ছেলেকে মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ৫দিন পর আইসিইউর চিকিৎসকরা বৃহস্পতিবার সকালে হৃদয়ের মৃত্যুর বিষয়টি জানান।
হৃদয়ের মামা মো. রাশেদ জানান, ৬ বছরের শিশুকে ১৬ বছর বয়সী মানুষের ইনজেকশন পুশ করা হয়। ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাগিনা হৃদয় মারা গেছে। তাদের সাথে আপোষ করার জন্য একদল আমাদের চাপ দিচ্ছে। কিন্তু আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. সাইফুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, শিশুটির ওজন ও বয়স পরিমাপ করে অপারেশন করার জন্য এনেসথেসিয়া ইনজেকশন দেয়া হয়। ইনজেকশন দেয়ার পর তার হার্ট ব্লক হয়ে যায়। যার কারণে তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়। এতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের কোন রকমের গাফেলতি নেই। তাকে কোন ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়নি।