হাটহাজারী মডেল থানায় উত্তেজিত জনতা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (০৫ অগাস্ট) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে হামলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধসহ মোট ছয়জন গুরুতর আহত হয়।
আহতরা হলেন, সিনাত (১৯), সিয়াম (১৬), নিহান (১৬), রশ্মি আক্তার (২৬) ও জাহাঙ্গীর (২০)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সিএনজি চালক জামাল এবং পথচারী সিয়াম, সিনাতসহ তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
থানায় হামলার পূর্বে উত্তেজিত জনতা কলেজ গেট এলাকায় এক ছাত্রলীগ নেতার ব্যবসায়ীক অফিস এবং থানার সামনে ফেন্সি সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করে এসি, ফ্যান, টিভিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং নথিপত্র চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের উপর ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এছাড়াও সরকারহাট বাজারে অবস্থিত সেবাধর্মী সংগঠন মির্জাপুর মিতালীর কার্যালয় ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা। এই সময় বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশে হাসান সেন্টার নামে একটি বিলাশ বহুল মার্কেটও ভাংচুর চালানে হয়।
বাজারে পূর্ব পার্শ্বে স্থাপিত গ্রীন পার্ক নামে একটি কমিউনিটি সেন্টারে ভাংচুর চালানো হয়। সেখানে রাখা একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয় এবং উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজিত জনতা আ.লীগ নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙ্গচুর চালায় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার পর পর হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মাইকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় ঢুকে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং পুলিশকে মাদ্রাসা ছাত্রদের মাদ্রাসায় ঢুকার সুযোগ দিতেও আহবান জানান মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও ঘটনার পর পর উপজেলার আওতাধীন বিভিন্ন হাটবাজারে দোকান পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের সংবাদ এলাকায় প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে উপজেলার মহাসড়ক, পৌরসভা, বিভিন্ন ইউনিয়নের আনাছে কানাছে, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছাত্র, জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী সহ সর্বস্থরের জনতা উল্লাসে মেতে উঠে বাড়ি ঘর থেকে বেড় হয়ে পড়ে। প্র
ত্যেক এলাকায় সর্বস্তরের জনতাকে আনন্দ মিছিল করতে দেখা গেছে। এই সময় অনেকে নতুন করে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন। সরকার পদত্যাগের খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিস্টি বিতরণ করার খবরও পাওয়া গেছে। হাটহাজারীর সমগ্র এলাকা শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত ছিল আজ সারাদিন। হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার সামনে বিশাল গণজমায়েত হয় এবং এই সময় মহিলাদেরও উল্লাসে অংশ নিতে দেখা গেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা প্রায় ৭ টা) থেমে থেমে পুলিশ গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। বর্তমানে হাটহাজারী থানার আশেপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক জানান, গুলিবিদ্ধ ৩ জনকে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে তবে এদের মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা চালক জামালের অবস্থা খুব খারাপ বলেও জানান তিনি।