টেকনাফে হাজী করিম উল্লাহ খুনের রহস্য অবশেষে উন্মোচন হতে চলেছে। এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড আপন মেয়ের স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। গত শনিবার তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে আপন মেয়ের জামাতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। সে যেসব তথ্য দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসীদেরও আটক করতে কাজ করছে পুলিশ।
জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মৃত হাজী সাব্বির আহমেদের ছেলে হাজী করিম উল্লাহর মৃতদেহ গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কচ্ছপিয়া ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে কোথাও দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যান। এ সময় তার মোবাইল বন্ধ ছিল। পরের দিন সকালে অজ্ঞাত মৃতদেহ হিসেবে পুলিশ উদ্ধার করে কঙবাজার জেলা সদর মর্গে প্রেরণ করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবার তার লাশ শনাক্ত করে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিহত হাজী করিম উল্লাহর জানাজা শেষে টেকনাফ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী মুরশিদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসআই তারেক রহস্যময় এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাজী করিম উল্লাহ ওই দিন রাতে নাস্তাসহকারে আপন মেয়ের ঘরে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মাঠ পাড়ায় দাওয়াতে অংশ নেন। সেখান থেকে ফেরার পথে খুনের শিকার হন। কিন্তু এ বিষয়টি প্রথম থেকেই ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে হাজী করিম উল্লাহর স্ত্রী ও জামাতা। এ থেকে অনেকে সন্দেহের তীর ছুড়ে যে, এই খুনের মাস্টার মাইন্ড স্ত্রী ও মেয়ের জামাতা। কিন্তু স্ত্রী মামলার বাদী হওয়ায় পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে মামলার তদন্ত কাজ পরিচালনা করে। তথ্য প্রযুক্তি, মোবাইল ট্র্যাকিং ইত্যাদির মাধ্যমে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা হাজী করিম উল্লাহর খুনের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে আপন মেয়ের স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে চিহ্নিত করে। পরে অবশ্য ওই দিন রাতে মেয়ের ঘরে দাওয়াতে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করে তারা। অবশেষে মামলার প্রায় দেড় মাসের মধ্যে তাকে আটক করে রহস্য উন্মোচন করতে পেরেছে পুলিশ।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, আটক আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে রিমাণ্ডে নিয়ে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করে এ হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উন্মোচন করা হবে।