ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময়ে হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘ ও অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দেবে বিএনপি। গতকাল শনিবার রাতে ঢাকার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে দলীয় এই সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনে বিজয়ের পূর্বে সরকার তার সরকারি বাহিনী দিয়ে যে নৃশংসভাবে ‘গণহত্যা’ করেছে, সে ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকে কথা বলে এসেছি এবং জাতিসংঘের উদ্বেগ ছিল সবচেয়ে বেশি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, জাতিসংঘের কাছে এই বিষয়ে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে আমরা চিঠি পাঠাব। আমরা এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমাদের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যিনি, তাকে আমরা চিঠি দেব।’ খবর বিডিনিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একই সঙ্গে ইউএই (সংযুক্ত আবর আরিরাত), যেখানে আমাদের প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে বন্দি করা হয়েছে এই আন্দোলন সমর্থন জানানোর জন্য; আমরা তাদের মুক্তির জন্যও এই সরকারকে উদ্যোগ নিতে চিঠি দেব।’ এসব চিঠি দুই–একদিনের মধ্যে দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনার পতনের দিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের ওপর হামলার খবর আসছিল। হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাও আক্রান্ত হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়েছি যে, দেশে ও বিদেশে গণমাধমে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করা হচ্ছে। সেখানে বিভিন্নভাবে আপনার সংখ্যালঘু সস্প্রদায়ের ওপরে আক্রমণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি– এ সমস্ত বিষয় তুলে ধরছে, যা আমরা মনে করি একেবারেই সঠিক নয়। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে যা সম্প্রদায়গতভাবে নয়, রাজনৈতিক ঘটনা ঘটেছে।’ এসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এটার সঙ্গে আমাদের (বিএনপিকে) জড়িয়ে একটা খবর পরিবেশন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এটার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা বলতে চাই, এই ধরনের ঘটনার সাথে বিএনপি তো জড়িত নয়ই, বাংলাদেশের সুস্থ স্বাভাবিক কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না। এটা একটা চক্রান্ত চলছে, যে চক্রান্তে বাংলাদেশের অর্জিত নতুন করে যে স্বাধীনতা, সেটাকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’