হতাশার হারে শুরু

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বরাবরই নতুন একটি সিরিজ আসে আর বাংলাদেশ দল তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন করে। কখনোই জয়ের আবার কখনোই ভাল খেলার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনটিই হয়ে উঠে না। বরাবরই ম্যাচ শেষে হতাশার সুরে বলতে হয় এখানে, ওখানে আরও উন্নতি করতে হবে। কিন্তু সে উন্নতি কবে সাধিত হবে সেটা কেউ বলতে পারে না। সেই গতানুগতিক স্লোগান নিয়ে বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি হিসেবে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানের কাছে হতাশার হার দিয়ে টাইগারদের শুরু করতে হলো সিরিজ। গত কিছুদিন ধরে খুব করে নতুন কিছু শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সেগুলো হচ্ছে ‘ইন্টেন্ট’, ‘ইম্প্যাক্ট’, প্রসেস অনুসরণ করা’, ‘মানসিকতার বদল’ কিংবা ফলাফল বড় কথা নয়। একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে সে সব শব্দের কোন প্রতিফলন দেখা গেলনা। বরং আগের সেই হতাশার ব্যাটিংই চোখে পড়ল। আর তাতে পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে হেরে সিরিজ শুরু করতে হলো বাংলাদেশকে।
এমনিতেই ফর্ম কিংবা শক্তি সামর্থ এমনকি টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের বাস্তবতার নিরিখে পাকিস্তানের জয়টা অনুমিতই ছিল। যদিও বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির শেষ সুযোগ হিসেবে পাওয়া এই সিরিজে নিজেদের দুর্বল জায়গা গুলো উন্নতি করাই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু প্রথম ম্যাচে তার ছিটেফোটাও দেখা গেলনা। বরং দলের বড় ভরসার নাম গুলো কেমন যেন আরো বেশি ভোতা হয়ে গেছে। মোস্তাফিজুর রহমানের নির্বিষ বোলিং কিংবা মোসাদ্দেক, সোহানের হতশ্রী ব্যাটিং ভাবনা যেন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে যথারীতি দারুণ সূচনা এনে দেন রিজওয়ান ও বাবর আজম। খুব বেশি রান না আসলেও ভিতটা বেশ ভালভাবেই গড়ে দিয়েছিলেন দুজন। পাওয়ার প্লেতে ৪৩ রান তুলতে পারে পাকিস্তান। এরপর দুজন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়লেন ১৫ বার। অষ্টম ওভারে ৫২ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৫ বলে ২২ রান করা বাবর আজমকে ফেরান মিরাজ। দ্বিতীয় উইকেটে রিজওয়ান ও শান মাসুদ মিলে গড়েন আরেকটি কার্যকর জুটি। মাসুদ শুরুতে একটু সময় নিলেও পরে খেলতে থাকেন হাত খুলে। তাকে ফেরান নাসুম আহমেদ। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা মাসুদ করেন ২২ বলে ৩১ রান। মেরেছেন ৪টি চার এবং একটি ছক্কা। এরপর তাসকিন আবং হাসান মাহমুদের তোপের মুখে পড়ে দ্রুত ফিরেছেন পাকিস্তানের হায়দার, ইফতেখার এবং আসিফ। তবে এক প্রান্ত ধরে রেখে যা করার সব রিজওয়ানই করেছেন। ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত অফরাজিত ছিলেন ৫০ বলে ৭৮ রান করে। মূলত তার কল্যাণে শেষ ৫ ওভারে পাকিস্তান তোলে ৫৮ রান। আর তাতে পাকিস্তানের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ১৬৭ রানে। নিজের শেষ ১২ ম্যাচের ৮টিতেই হাফ সেঞ্চুরি করলেন রিজওয়ান। বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন নিয়েছেন ২টি উইকেট।
হ্যাগলি ওভালের এই উইকেটে লক্ষ্যটা মোটেও খুব বড় কিছু নয়। কিন্তু ১৬৮ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কখনোই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি পাকিস্তানকে। সাব্বির ও মিরাজের উদ্বোধনী জুটি ছিল ২৫ রান পর্যন্ত। মিরাজ করতে পেরেছেন ১১ বলে ১০ রান। আর সাব্বির ফিরেন ১৮ বলে ১৪ রান করে। লিটন দাস এবং আফিফ হোসেন জুটি গড়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। ২৫ বলে ৩৫ রান করে লিটন বিদায় নেন মোহাম্মদ নওয়াজের বলে। বাঁহাতি এই স্পিনারের পরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন মোসাদ্দেক। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েও তা করতে পারেননি নওয়াজ। তবে পরের ওভারে বিদায় নেন আফিফ। করেন ২৩ বলে ২৫ রান। আর অধিনায়ক সোহান ফিরেছেন ৮ রান করে। এরপর যা একটু লড়াই করার চেষ্টা করেছেন ইয়াসির আলি রাব্বি। ততক্ষণে ম্যাচ অবশ্য শেষ হয়ে গেছে। দর্শকদের খানিকটা বিনোদন দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত ৫টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২১ বলে ৪২ করে অপরাজিত থাকেন রাব্বি। আর বাংলাদেশ থামে ১৪৬ রানে। তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় ২১ রানের হার। পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম নিয়েছেন ৩টি উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ চট্টগ্রামে
পরবর্তী নিবন্ধশান্তির নোবেল গেল বেলারুশ ইউক্রেন ও রাশিয়ায়