হকিতে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সকে ছাড় দেবেন না বাংলাদেশের ডাচ কোচ

স্পোর্টস ডেস্ক | সোমবার , ৪ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

নেদারল্যান্ডস থেকে আসা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব২১ দলের নতুন কোচ সিগফ্রাইড আইকম্যান বলেছেন হকিতে অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্সকেও ছাড় দেওয়ার পক্ষপাতি নন তিনি। গতকাল দুই সহকারী কোচ আশিকুজ্জামান ও মশিউর রহমান বিপ্লবকে সঙ্গে নিয়ে আইকম্যান বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজের লক্ষ্যের কথা জানান।

দুই দিন আগেই আইকম্যানের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। গতকাল রোববার ফেডারেশনের সভাকক্ষে নতুন এই কোচের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন সাধারণ সম্পাদক লে. কর্ণেল(অব.) রিয়াজুল হাসান। আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে হবে অনূর্ধ্ব২১ হকি বিশ্বকাপ। জুনিয়রদের বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। এই বড় আসরকে সামনে রেখে দেরিতে হলেও নেদারল্যান্ডসের কোচকে মাত্র চার মাসের জন্য এনেছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি কাজ শুরু করবেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনের পর রোববার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এসে খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হলেন নতুন কোচ। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান তিনি। ২৪ দলের জুনিয়র বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে ‘এফ’ গ্রুপে। যেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও দক্ষিণ কোরিয়া। মাত্র অল্প কিছুদিন খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুশীলন করিয়ে এসব দলের বিপক্ষে লড়াইয়ের সাহস দেখাচ্ছেন না কোচ। বাস্তবতা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো রেজাল্ট করতে চাই। আমাদের গ্রুপের দলগুলো শক্তিশালী। ওদের সঙ্গে ভালোভাবে লড়াই করতে চাই। যেন আমাদের কেউ উপেক্ষা না করতে পারে। এই ছেলেদের মধ্যে বিশ্বাস জাগাতে চাই যেন আমরা ভালো খেলতে পারি।’ আইকম্যান যোগ করেন, ‘আমাদের গ্রুপে দেখুন। এই গ্রুপের অন্যতম দুর্বল দল আমরা। আমাদের বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এখানে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে। যারা অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ। ফ্রান্স এর আগে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে। সমপ্রতি ফ্রান্স জাতীয় দল হারিয়েছে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডসকে। কোরিয়া এশিয়ার সেরা দল। আমাদের লক্ষ্যই থাকবে তাদের জন্য ম্যাচটিকে কঠিন করে তোলা। তাদের আমরা ছাড় দেবো না। আমরা আশা করি যে ভাগ্য ভালো হলে যে কোনও একটা দলকে হারিয়ে চমক দেখাতে পারি। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরাও কম নই। ছেলেরা খেলতে প্রস্তুত ও রোমাঞ্চিত।’ জাতীয় যুব দলের ক্যাম্পে বর্তমানে রয়েছেন ৪০ জন কোচ। প্রথম এক মাস সবাইকে নিয়ে ফিটনেসের উন্নতির জন্য কাজ করবেন কোচ। আগস্ট মাস ধরেই এটা পর্যবেক্ষণ করবেন স্থানীয় কোচেরা। তবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসে নতুনভাবে কাজ শুরু করবেন আইকম্যান।

এমনিতেই দেশে ঘরোয়া হকি চালু নেই দীর্ঘদিন। স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে কোচ সন্তুষ্ট নন। তাই সবার আগে ফিটনেসকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন আইকম্যান, ‘আমি চাই বিশ্বকাপ লেভেলের ফিটনেস থাকুক খেলোয়াড়দের। এটা অর্জন করতে না পারলে প্ল্যান বি বা সি থাকবে আমার।’ বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে পাকিস্তান ও ইউরোপের দেশগুলোতে ১০টি প্রস্তুতি ম্যাচের পরিকল্পনা রয়েছে ফেডারেশনের। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমরা সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানে পাঠাবো জুনিয়র দলকে। সেখানে কমপক্ষে চারটা ম্যাচ খেলতে চাই। এছাড়া ইউরোপের দলের সঙ্গে খেলবো আমরা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সেখানে যেতে পারি আমরা। সেখানে নেদারল্যান্ডস এবং জার্মানির সঙ্গে ১০ দিনের ট্যুর হবে। ওই দেশগুলোর সঙ্গে কমপক্ষে ৬টা ম্যাচ খেলবো।’ বিশ্বকাপের জন্য সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকার বাজেট ঠিক করেছে ফেডারেশন। এরই মধ্যে এক তৃতীয়াংশ টাকা হাতে পেয়েছেন কর্মকর্তারা। বাকি টাকার জন্য সরকারের দিকে চেয়ে রয়েছে ফেডারেশন। আশার কথা, বাকি টাকাও সরকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইনজুরিতে পড়ে শুরুতেই মাঠ ছাড়লেন মেসি
পরবর্তী নিবন্ধডি ভিলিয়ার্সের সেঞ্চুরিতে চ্যাম্পিয়ন দ. আফ্রিকা