পেশায় গৃহিণী হলেও তিনি একজন সম্পদশালী। এরমধ্যে কিছু সম্পদের বৈধতা থাকলেও বেশিরভাগই অবৈধ। মূলত স্বামীর অসাধু উপায়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। সেই তিনি হলেন নগরীর পাহাড়তলী সাব–রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক সহকারী মোহাম্মদ আলমগীর প্রকাশ লাতুর স্ত্রী হাসিনা বেগম। থাকেন নগরীর পাথরঘাটার ৪ নং গলির ব্রিকফিল্ড বাইন এলাকায়। এ দম্পতি সর্বমোট ৬৩ লাখ ৮২ হাজার ২৭১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই করলে উঠে আসে এ তথ্য। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল হাসিনা বেগম ও তার স্বামী মোহাম্মদ আলমগীর প্রকাশ লাতুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপসহকারী পরিচালক আপেল মাহমুদ বিপ্লব।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকের নির্দেশনা অনুসারে ২০২২ সালের ৬ মার্চ যাবতীয় স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ, আয়ের উৎস এবং সম্পদ অর্জনের তথ্য উল্লেখ করে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন হাসিনা বেগম। সেখানে তিনি নিজ নামে ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১৩ লাখ ২১ হাজার ৮৪২ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ সর্বমোট ৮৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৪২ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের ঘোষণা প্রদান করেন। যাচাই করলে দেখা যায়, হাসিনা বেগমের নামে ৭১ লাখ ৬০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৯ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪২ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অর্থাৎ হাসিনা বেগম তার নিজ নামে ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৪২ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। একই সময়ে তিনি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬৫ টাকার পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় করেছেন। সেই হিসেবে তিনি মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৫০৭ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এরমধ্যে ৪৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৩৬ টাকার সম্পদ তার গ্রহণযোগ্য। বাকী ৬৩ লাখ ৮২ হাজার ২৭১ টাকা তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। এজাহারে বলা হয়, হাসিনা বেগম একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও স্বামী মোহাম্মদ আলমগীর প্রকাশ লাতুর অসাধু উপায়ে উপার্জিত অর্থ বৈধ করতে নিজ নামে সম্পদ গড়েছেন। স্ত্রীকে এমন কাজে সহায়তা করেছেন মোহাম্মদ আলমগীর প্রকাশ লাতু। যা দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, হাসিনা বেগম গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও নিজ নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত আজাদীকে বলেন, মামলা তদন্তকালে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে বা ভিন্ন কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তা আমলে নেয়া হবে।