বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকা আমাদের ওপর ভিসা নীতি দেয়, স্যাংশন দেয়। এটা আমাদের জন্য আনন্দের নয়, লজ্জার কথা। স্বাধীন–সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে অন্য দেশ নিষেধাজ্ঞা দেয় শুধুমাত্র সেই দেশের সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতির কারণে। তাদের দুর্বৃত্তায়নের কারণে। এটা আমেরিকা দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর হমান’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। খবর বাংলানিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আগে এই দেশে এক দলীয় বাকশাল কায়েম হয়েছিল। সব দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরকার নিয়ন্ত্রিত শুধুমাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের মত প্রকাশের সিদ্ধান্ত, মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার এই জিনিসগুলো নিয়েই বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার যে দর্শন বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ, তা তিনি এনেছিলেন। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন ‘গণতন্ত্রকে যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়, তাহলে রাজনীতিতে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল পাওয়া যায়’।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক দলের দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এনেছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালে এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১২ সালে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। আদালত বলেছিলেন, আরও দুই বার এই ব্যাবস্থায় ভোট করা যেতে পারে। কিন্তু তারা তা গায়ের জোরে বাতিল করেছে। এককভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য, এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেদিন কিন্তু খালেদা জিয়া প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মধ্য দিয়ে দেশে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতার জন্ম দেওয়া হল। তা প্রমাণ হয়েছে, প্রতিটা নির্বাচনের আগে আমাদেরকে লড়াই করতে হয়। কীভাবে নির্বাচনে যাব, নির্বাচনে যাব কিনা। তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণরূপে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণের আশপাশে তারা নেই। জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা সব সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।