পাহাড়ে নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে সক্রিয় হচ্ছেন নারীরা। জেলার শতাধিক নারী ফুটবল খেলোয়াড় মানসিক ও শারীরিক ফিটনেস ঠিক রাখতে এখন নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য জিমনেসিয়াম ও অনুশীলন উপযোগী মাঠসহ নানা সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
খাগড়াছড়ি জেলা স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর আবারো চেংগী ফুটবল একাডেমির অনুশীলনে অংশ নেন ৩৫ জন নারী ফুটবলার। প্রতিদিন চলে এই অনুশীলন। নারী খেলোয়াড়দের মানসিক ও শারীরিক ফিটনেস ঠিক রাখতে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও খেলাধুলা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে ফুটবলকে এগিয়ে নিতে জিমনেসিয়াম, ইনডোর ও অনুশীলন উপযোগী মাঠসহ সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর দাবি খেলোয়াড়দের। পাশাপাশি তারা সরকারি বেসরকারি সহায়তাও চেয়েছেন।
জানা যায়, বেশিরভাগ নারী ফুটবলার আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং করোনা পরিস্থিতিতে অনেকের অভিভাবকরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। নারী ফুটবলাররা বলছেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সুযোগ পেলে ভালো কিছু করতে পারবেন তারা। অনুশীলনের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কমতি নেই তাদের। স্বপ্ন তাদের জাতীয় দলে নাম লেখানো। মাঠে অনুশীলন করতে আসা খেলোয়াড়রা জানান, আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা। তারপরও একাডেমির মধ্যে অনুশীলন করছি। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা করছি। ভবিষ্যতে বড় ফুটবলার হতে চাই। তবে সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হলে অনেকে অনুশীলন করতে আসবে। মেয়েরা আরো জানান, অনেকের আর্থিক অবস্থা ভালো না। স্টেডিয়ামের আসা যাওয়ার খরচও বহন করতে পারেন না। ফলে তারা অনুশীলন থেকে ছিটকে পড়ছেন।
ক্রীড়া সংগঠক নোভেল চাকমা জানান, খাগড়াছড়িতে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও জেলার নারী ফুটবলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে কয়েকজন খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে খেলছেন। জেলায় শতাধিক নারী ফুটবলার রয়েছেন। তবে অনেকেই সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও আর্থিক দীনতার কারণে অনুশীলনে যোগ দিতে পারছেন না। সরকার বা বাফুফে যদি খেলোয়াড় ও একাডেমিগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করত তাহলে এখানকার মেয়েরা আরো অগ্রসর হতেন। তবে করোনাকালে মেয়েরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য অনুশীলন চালু রাখতে কাজ করছেন চেঙ্গী একাডেমির পরিচালক ক্লাহলাচাই চৌধুরী। তিনি বলেন, পাহাড়ে নারীরা নানা প্রতিবন্ধকতায় এখনো পিছিয়ে রয়েছে। অনেকের পরিবার একাবারে সার্মথ্যহীন। একাডেমির মাধ্যমে প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের মৌলিক দক্ষতা তৈরি করার লক্ষ্যই একাডেমির মূল উদ্দেশ্য। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া একাডেমির বাঁচানো কঠিন। সরকারি সহায়তা পেলে জাতীয় পর্যায়ে খেলার মতো ভালো খেলোয়াড় তৈরি করা সম্ভব।