কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার লেমশীখালী ইউনিয়ন ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সংযোগকারী ঠান্ডা চৌকিদার সড়কটিকে পিলটকাটা খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে দুই ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ জনগণের মাঝে তৈরি হলো সেতুবন্ধন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার আরসিসি গাডার ব্রিজটি নির্মাণের ফলে এই দুই ইউনিয়নবাসীর দুর্ভোগহীন যোগাযোগের স্বপ্ন পূরণ হলো।
এলাকাবাসীরা জানান, লেমশীখালী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে পিলটকাটা খাল। খালের দুই পাড়ের মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে নৌকা দিয়ে যোগাযোগ করে আসছিল। ভালো ছিল না দুপাড়ের চলাচলের সড়কও। ১৯৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ের পর এ খালের উপর স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যাগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। এই দ্বীপে বৃটিশ শাসন আমল থেকে অনেক স্থাপনা নির্মাণ হলেও এই সাঁকোর স্থানে ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়নি কোনো সরকার। যুগের পর যুগ অতিক্রম হলেও দুই গ্রামের মানুষের দুঃখ–দুর্দশা ও ভোগান্তির যেন শেষ ছিল না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুতুবদিয়া–মহেশখালী আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এমপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন লেমশীখালী ইউনিয়নের ঠান্ডা চৌকিদার পাড়া হতে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ডিংগাভাংগা এলাকায় পিলটকাটা খালের উপর সাঁকোর স্থলে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে লেমশীখালী ইউনিয়ন ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নের সংযোগকারী সড়কটির পিলটকাটা খালের উপর অবশেষ ব্রিজ নির্মাণ করা হলো।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এক সময় দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। একটু বৃষ্টি হলে সাঁকোটি ডুবে যেত। নৌকা দিয়ে চলাচল করতো এলাকাবাসী। দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে বর্তমান সরকার এই ব্রিজ নির্মাণ করে গ্রামকে শহর করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
নতুন ব্রিজ পেয়ে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, যুগ যুগ ধরে তাদের দুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না। একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ি থেকে নৌকায় চড়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতে হতো। কত বই পানিতে পড়ে ভিজে গেছে। এখন ব্রিজের উপর দিয়ে হেটে স্কুলে যেতে পারছে তারা। এ যেন স্বপ্নের বাস্তবায়ন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং তার সরকারের উন্নয়নে কৃতজ্ঞ।
কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর বলেন, লেমশীখালী ইউনিয়নের ঠান্ডা চৌকিদার পাড়া, মতির বাপের পাড়াসহ পাঁচ গ্রামের মানুষ ঠান্ডা চৌকিদার সড়কের সাঁকোর উপর দিয়ে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কাজে, হাট বাজারে যাতাযাত করতো। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে এ সড়কের উপর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে সাঁকোর স্থলে দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ হয়েছে। সড়ক সংস্কার ও ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় দুই গ্রামবাসী মহা খুশি। এমনকি বিকাল হলে স্থানীয় শত শত লোকজন নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই ব্রিজ দেখতে ও মুক্ত হাওয়া ভোগ করতে এ ব্রিজের উপর ভিড় জমায়।