স্থায়ীকরণে অগ্রগতি না হলে ঈদের পর এক দফার আন্দোলন

চসিকের অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ জুন, ২০২৩ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

স্থায়ীকরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ঈদুল আজহার ছুটির পর এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারীরা। তাদের দাবি, আগামী ২০২৩২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারীদের স্থায়ীকরণের কোনো সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি। এছাড়া স্থায়ীকরণের সময় বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয় চতুর্থবার যে ছাড়পত্র দেয় তার মেয়াদও আগামী ৩০ জুন শেষ হতে চলেছে। এ অবস্থায় স্থায়ীকরণের উদ্যোগ না নিলে আন্দোলনে যাবেন তারা।

স্থায়ীকরণের দাবিতে গতকাল চসিক অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারী পরিষদ মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এতে আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। সংগঠনটির যুগ্ম সচিব জাহিদুল ইসলাম জোমাদ্দার আজাদীকে বলেন, মেয়র মহোদয়ের আশ্বাসে আমাদের আন্দোলন স্থগিত ছিল। নিয়মিতকরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন আমাদের। এরপর গ্রেডেশন লিস্ট দেয়া হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঈদুল আজহার ছুটির পরের সপ্তাহে স্থায়ীকরণের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে মেয়রের আশ্বাসে স্থগিত হওয়া কর্মসূচি পুনরায় এক দফা দাবি হিসেবে স্থায়ীকরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে আমরা বদ্ধপরিকর। স্মারকলিপিতে চসিক শ্রমিক ও কর্মচারী লীগ (সিবিএ) মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এবং তাদের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ারও অভিযোগ করা হয়।

অস্থায়ী কর্মচারীরা জানান, সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের পরও চাকরি স্থায়ীকরণে ‘অপারগতা’ প্রকাশ করায় সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর চসিকের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে তার দপ্তরে অবরুদ্ধ করা হয়। পরে মেয়রের আশ্বাসে সরে যান তারা। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও স্থায়ীকরণে অগ্রগতি হয়নি।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটিতে অনুমোদিত জনবল কাঠামো অনুযায়ী পদ আছে ৪ হাজার ২২৬টি। কিন্তু কর্মরত আছেন ৮ হাজার ৮০৩ জন। এর মধ্যে স্থায়ী আছেন ২ হাজার ৭৭০ জন। অর্থাৎ অস্থায়ী আছেন ৬ হাজার ৩৩ জন। অনুমোদিত জনবল কাঠামোর বিপরীতে বর্তমানে শূন্য পদ আছে এক হাজার ৪৫৭টি।

অস্থায়ীদের মধ্যে অনেকে গত ২০২৫ বছরের অধিক সময় ধরে কর্মরতও আছেন। কারো অবসরে যাওয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু এদের স্থায়ী না করে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ পদে ৬০ জন নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তখন স্থায়ীকরণের মাধ্যমে শূন্যপদ পূরণের দাবিতে আন্দোলন করেন অস্থায়ীরা। পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করে চসিক। স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পৌনে চার ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারীরা। ওই সময় মেয়র স্থায়ীকরণের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। পরে ৫ ডিসেম্বর সিটি মেয়রকে স্মারকলিপি প্রদান, ৮ ডিসেম্বর নগর ভবনের সামনে মানববন্ধন করা হয়।

গত বছরের ১৯ এপ্রিল একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চসিকের অস্থায়ীদের বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তাদেরকে আইনকানুনের আওতায় এনে সুযোগ দিয়ে রেগুলাইজ (নিয়মিত) করার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। এর প্রেক্ষিতে ২৪ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি বৈঠক হয়। এতে অস্থায়ীদের স্থায়ী বা নিয়মিতকরণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২৬ মে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণে সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে অনিবন্ধিত আইপি টিভি ও অনলাইন টিভির বিরুদ্ধে অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধভয়ের কিছু নেই, ঘাবড়ালে চলবে না : প্রধানমন্ত্রী